নওগাঁ সঞ্চয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২০, ০৬:৩২ পিএম

নওগাঁয় জাতীয় সঞ্চয় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির মাধ্যমে ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের কারণে ১১১ আমানতকারী নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

প্রায় এক বছরের বেশি অতিবাহিত হলেও তারা তাদের ত্রৈমাসিক লভ্যাংশ ও মূল টাকা কোনোটিই উত্তোলন করতে পারছেন না। ফলে অবসরপ্রাপ্ত এসব ব্যক্তি তাদের সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। দিনের পর দিন জাতীয় সঞ্চয় অফিসে ধরনা দিয়ে কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না তারা।

নওগাঁর জাতীয় সঞ্চয় অফিসের এসব গ্রাহক কেউ সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ দেখিয়ে সঞ্চয়পত্রের বই সংগ্রহ করেছেন। আবার কেউ সরাসরি সঞ্চয় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে সঞ্চয়পত্রের বই সংগ্রহ করেছেন। তাদের কেউ কেউ কমপক্ষে ত্রৈমাসিক লভ্যাংশ ৩ বার, আবার কেউ কেউ ১০ বারও তুলেছেন। এরপর তাদের মধ্যে ৬২ জন গ্রাহক জানতে পারেন তাদের টাকা জমা দেয়ার রশিদ ভুয়া। আবার ৪৯ জন গ্রাহককে জানিয়ে দেয়া হয় যে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারি কোষাগারে তাদের টাকা জমাই দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জানাজানি হলে রাজশাহী বিভাগীয় দুদক কার্যালয় থেকে তদন্ত শেষে একটি মামলা করা হয়। পরে ওই অফিসের সহকারি পরিচালক, অফিস সহকারি, অফিস সহায়কসহ চারজনকে গ্রেফতার করে দুদক। বর্তমানে তারা সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

আমানতকারীদের মধ্যে আবু সালেহ মো. মুসা ও মো. মোস্তাইন বিল্লাহ জানিয়েছেন, তারা মোট ১১১ জন গ্রাহক ২০১৯ সালের জুন মাসের পর থেকে ত্রৈমাসিক লভ্যাংশ কিংবা মূল টাকা কোনোটাই ফেরত পাচ্ছেন না। গ্রাহকদের অধিকাংশ সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি। এই লভ্যাংশ দিয়েই তাদের সংসারের ব্যয় নির্বাহ হয়ে থাকে। কাজেই লভ্যাংশ না পেয়ে খেয়ে না খেয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।

সম্প্রতি জাতীয় সঞ্চয় অফিসের সামনে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

এ ব্যাপারে বর্তমান সহকারি পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেছেন, সঞ্চয় বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই ১১১ জনের হিসাব আপাতত স্থগিত করা রয়েছে। এ ব্যাপারে দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে তার কিছুই করার নেই।

সরকারি একটি দায়িত্বশীল দপ্তরের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য এই সাধারণ আমানতকারীরা কেন মূলধন হারিয়ে পথে বসবেন, এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh