নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২০, ০৫:৪৮ পিএম
ক্রমাগত দেশের বায়ুর মান খারাপ হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় বাড়ছে বায়ুদূষণ। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইকিউ এয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যে উঠে এসেছে- গত তিন দিন বায়ুদূষণের মাত্র ছিলো খুবই অস্বাস্থ্যকর। আগামী ছয় দিন ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জের বায়ুদূষণের মাত্রা আরো বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বাতাসে সবচেয়ে বেশি দূষিত বস্তুকণার পরিমাণ, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। প্রতিবছর গরম ও বৃষ্টির মৌসুম শেষে নভেম্বরের শুরুর দিকে শীতের মৌসুম আসতেই ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। কুয়াশায় বাতাসে জলীয় বাষ্পের সঙ্গে যুক্ত হয় মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণা। এবার নভেম্বরের শুরুতে শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকলেও আগেভাগেই শুরু হওয়ায় বস্তুকণা বাতাসে দ্রুত জমা হতে শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের তথ্য মতে, আগামী রবিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে দেশে টানা ৬ দিন বায়ুর মান খারাপের পূর্বাভাস দিয়েছে। বায়ু দূষণে যেকোনো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই ৬ দিন মানুষকে বাসার বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) সংস্থার দেয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে গত দিনের বায়ু দূষণের গড় ছিলো ১০১ থেকে ১৫০ পিএম ২.৫ এর মধ্যে। বায়ু দূষণের কারণে শ্বাসকষ্টজনিত রোগী, বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষতি বেশি হবে। আগামী ৬ দিনের বায়ু দূষণের পূর্বাভাসে ১৫১ থেকে ২০০ পিএম২.৫ পর্যন্ত হতে পারে। এই সময়ে যারা বাড়ির বাইরে বের হবেন তাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই ভালো।
এ সময়ের ঢাকা মহানগরী বাষু দূষণের চিত্র তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুর মান ১৩১ পিএম২.৫, গুলশানের বে’স এডজওয়াটারে ১২০, ঢাকার ইউএস অ্যাম্বাসিতে ১১৭, বিটোপিতে ১১১, ওহাব বারিধারায় ১১১ ও বিটোপি গ্রুপে ৫৫। একই সময়ে সারাদেশের দূষণের চিত্র তুলে ধরে আইকিউ এয়ার বলছে, ঢাকায় বায়ুর মান ১১৬ পিএম২.৫, সাভারে ১১২, ত্রিশালে ১০২, মানিকগঞ্জে ৮৩, শ্রীপুরে ৮১, কুমিল্লায় ৭২ ও নারায়ণগঞ্জে ৪।
এদিকে বছরজুড়েই চলছে রাজধানীতে উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি। বর্ষায় ছিলো কাদা-পানি আর খানাখন্দের দুর্ভোগ। শুষ্ক মৌসুমে এসে সর্বসাধারণকে পড়তে হয়েছে ধুলাদূষণে। এ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সর্বসাধারণ। যেন দেখার কেউ নেই। উন্নয়ন-ধুলায় শ্বাস নিতেও কষ্ট নগরবাসীর। শহরের রাস্তার দুই পাশের দোকানপাট আর হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো ধুলায় ঢাকা পড়েছে। গতকাল রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজের পাশে যাত্রাপথে সাইদুল ইসলাম নামে এক প্রাইভেট কার চালক জানান, কালো রঙের গাড়ি এখানে আশপাশে কোথাও এক থেকে দুই মিনিট রেখে দেখুন ধুলার আস্তর কি পরিমাণ পড়ে। ধুলার কারণে এখানকার চায়ের দোকান আর খাবারের হোটেলে মানুষ খেতে পারে না।
বর্ষায় ঢাকার বাতাসের মান কিছুটা ভালো থাকলেও শীত এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবার খারাপ হতে শুরু করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারি দপ্তরগুলোর দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো চোখে পড়েনি।