শিশুকে ধর্ষণ করলেন নাতি, বিয়ে করলেন দাদা

জামালপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৪২ পিএম | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০৮:৪৩ পিএম

জামালপুরে নাতির ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ধর্ষণের শিকার শিশুকে বিয়ে করেছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদা।

ঘটনাটি ঘটেছে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া গ্রামে।

চাঞ্চল্যকর বিয়েটি সোমবার (১৬ নভেম্বর) ঘটলেও এতদিন গোপন রাখা হয়েছিলো। ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের দায়ে গ্রাম্য সালিশে ধর্ষণে অভিযুক্তকে দেয়া হয়েছে ১০টি দোররা।

স্থানীয়রা জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদর থেকে প্রায় ৬০ কি.মি. দূরের দুর্গম এলাকা চর আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া গ্রামে পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে (১১) বিয়ের প্রলোভনে টানা কয়েকবার ধর্ষণ করে ওই গ্রামেরই সুরমান আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (১৯)। এতে শিশুটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে। ১০-১২ দিন আগে তাকে কবিরাজী ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করানো হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি এলাকায় ফাঁস হয়ে যায়।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর চলতি সপ্তাহে স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন নাদুর উদ্যোগে গ্রামে সালিশ-বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশে শাহিন মিয়াকে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ১০টি দোররা মেরে তারই দাদা মহির উদ্দিনের সাথে শিশুটির বিয়ে ঠিক করেন মাতব্বররা। সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার গোপনে অভিযুক্তের বৃদ্ধ দাদার সাথে ১১ বছরের শিশুটিকে জোরপূর্বক বিয়ে দেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিন চোখে ঝাপসা দেখেন। এমনকি ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না। তার দুইটি স্ত্রী অনেক আগে মারা গেছেন। তৃতীয় বিয়ে করেছেন ২৭ বছর আগে। এটা তার চতুর্থ বিয়ে। তিনি সাত সন্তানের বাবা।

ধর্ষণের শিকার ১১ বছরের শিশুকে বিয়ের কারণ জানতে চাইলে বৃদ্ধ মহির উদ্দিন জানান, ‘আমার উফরে নাতির দোষ বর্তাইয়া বিয়া করাইছে নাদু মেম্বার, মাতব্বর গফুর মাস্টার, কদ্দুছ মাস্টারসহ গেরামের কয়েকজন। আমি নির্দোষ।’

চর আমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জয়নাল আবেদীন নাদু বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে সালিশ করা হয়েছে। অনৈতিক কাজ করায় সালিশে শাহিনকে ১০টি দোররা মারা হয়। পরে স্থানীয়দের সিদ্ধান্ত মোতাবেকই অভিযুক্তের দাদার সাথে মেয়েটিকে বিয়ে দেয়া হয়।

চর আমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh