করোনায় লকডাউনেও কমেনি দূষণ!

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১০:৩৩ এএম

অনেকে আশা করেছিলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে দেয়া লকডাউন পৃথিবীকে স্তব্ধ করলে তা দূষণ থেকে কিছুটা মুক্তি দেবে পরিবেশকে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এমনটা হয়নি।   

২০১৯ সালে আবহাওয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা নতুন মাত্রা ছোঁয়, যা ২০২০ সালেও অপরিবর্তিত থেকেছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বা ডব্লিউএমও জানাচ্ছে, করোনাকালীন লকডাউন এই বাড়তি দূষণকে কমাতে কোনো ভূমিকা রাখেনি।

কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড গত বছরে রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছায়। বাতাসে প্রতি দশ লাখ ভাগের ৪১০ দশমিক পাঁচ শতাংশই কার্বন ডাই অক্সাইড, যা অন্যান্য বছরের তুলনায় এমনকি গত দশকের বার্ষিক বৃদ্ধির হারের তুলনায়ও বেশি।

বিশ্বের মোট পানির বেশিরভাগই রয়েছে সমুদ্রে। মোট পানির কেবল ১০০ ভাগের এক ভাগ নদী দিয়ে বয়ে যায়। কিন্তু এই নদীগুলো ছাড়া ভূপৃষ্ঠে মিষ্টি পানি অন্যসব উৎস, যেমন হ্রদ ও জলাভূমি শুকিয়ে যাবে। এরই মধ্যে এমন আলামত দেখা যেতে শুরু করেছে। কেবল মানবজাতি নয়, প্রাণিজগত ও উদ্ভিদজগতেও পড়ছে এর প্রভাব।

পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডসহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের বাড়ন্ত মাত্রার ফলে বাড়ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা, গলছে বরফচূড়া। এর প্রভাবে বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন সমুদ্রের তটবর্তী দেশের অনেকাংশ নিশ্চিহ্ন হবার ঝুঁকিতে।

২০১৫ সাল থেকে ক্রমাগত এই কার্বন বৃদ্ধির হার চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে বলে মনে করেন ডব্লিউএমও সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসার পেটেরি টালাস। তিনি বলেন, ইতিহাসে এমন বৃদ্ধির হার অভূতপূর্ব, যার কোনো নজির আমাদের কাছে নেই।

লকডাউনের প্রভাব নিমিত্তমাত্র

করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে স্তব্ধ হয়ে পড়ে সব ধরনের যান চলাচল, বন্ধ হয়ে পড়ে বিমান চলাচলও। ডব্লিউএমওর বার্ষিক বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্য বলছে, অতিমারি নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি বাড়ালে দৈনিক কার্বন নিঃসরণের হার আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কমে আসে। কিন্তু তাতে আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই।

সংস্থাটি আরো বলছে, এই একই সময়ে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি ও কারখানায় উৎপাদনের হারে কমলেও তার কোনো প্রভাব বিশ্বের সার্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণে পড়েনি।

শিল্পক্ষেত্রে কম উৎপাদন হবার প্রভাব বার্ষিক কার্বন নিঃসরণকে ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ কমিয়ে আনবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু ডব্লিউএমও জানাচ্ছে, তাহলেও বাতাসে জমা কার্বনের বিপজ্জনক হারে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

যদিও ২০২০ সালের সম্পূর্ণ তথ্য-পরিসংখ্যান এখনো পাওয়া যায়নি, তবে তাসমানিয়া ও হাওয়াইতে অবস্থিত পরিবেশ পরীক্ষাগার থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, বাতাসে জমাটবাঁধা কার্বনের মাত্রায় কোনো পরিবর্তন এখনো নেই। -ডয়চে ভেলে

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh