ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১১:০৬ এএম
ইসমত দোহা মিঠু ও তার বাবা হবুবুর আলম ফকির। ছবি: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গৃহবধু নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে আসামিরা।
তবে পুলিশ বলছে, আসামিদের ধরতে তাদের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
১০ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে গত ১৯ নভেম্বর মুক্তাগাছা থানায় স্বামী ইসমত দোহা মিঠুকে প্রধান আসামি, তার বড় ভাই মেজবাহ উদ্দিন, শ্বশুর মাহবুবুর আলম ফকির, ও শ্বাশুড়ি শরিফা আক্তার লিলিকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা গৃহবধু মোছা. হালিমা খাতুন।
হালিমা জানান, ২০১৭ সালের শেষের দিকে খেরুয়াজানী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম ফকিরের ছেলে মিঠুর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। তাদের একটি নয় মাস বয়সী ছেলে রয়েছে। বিয়ের সময় তার বাবা সাধ্যমত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়। কিন্তু ছেলে আব্দুর রহিমের জন্মের কিছুদিন পর থেকে মিঠু পরিবারের অন্য সদস্যদের পরামর্শে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। গত ১১ সেপ্টেম্বর টাকার জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওইদিন তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
পরে ১৬ সেপ্টেম্বর মিঠুসহ তার পরিবারের সদস্যরা হালিমার বাবার বাড়িতে গিয়ে টাকার জন্য তাকে আবারো মারপিঠ করে। পরে লোকজন এসে তাকে রক্ষা করে। এ ঘটনায় মামলা করা হলেও তা তুলে নিতে হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং পুলিশ আসামিও ধরছে না বলেও অভিযোগ করেন হালিমা।
এদিকে মিঠুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনটিও বন্ধ রয়েছে। তার বাবা মাহবুবুর রহমান ফকির বলেন, বিয়ের পর থেকেই তার ছেলের স্ত্রী তাদের বাড়িতে থাকে না। বাবার বাড়িতে থাকার কারণে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। তবে তারা তাকে নির্যাতন কিংবা যৌতুক দাবি করেননি বলেও জানান তিনি।
মাহবুবুর রহমান ফকিরের ছোট ভাই চিকিৎসক মহসীন উদ্দিন বলেন, গৃহবধু নির্যাতনের বিষয়টি সত্য। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত। তারা টাকার জন্য সিই করতে পারে। আমাকেও আমার বাবার সম্পত্তির অংশ দেয়নি। মাহবুবুর রহমান ফকির তা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে।
মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, নির্যাতিতা গৃহবধু হালিমা খাতুন উপজেলার বাহেঙ্গ গ্রামের আব্দুল হালিম সরকারের মেয়ে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামি ধরার জন্য পুলিশের সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।