মৃত্যুর তারিখটাও মিলিয়ে দিলো দুই বন্ধু ফিদেল-ম্যারাডোনাকে

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১১:৪৬ এএম | আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০, ১২:৩১ পিএম

অদ্ভূত এক সমাপতন ছাড়া আর কী-ই বা বলা যেতে পারে। ঠিক চার বছর আগে ২৫ নভেম্বর মারা যান দিয়াগো ম্যারাডোনার ‘দুঃসময়ের বন্ধু’ কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল ক্যাস্ত্রো।

১৯৮৬ সালে প্রথমবার কিউবা গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। ক্যাস্ত্রোর সাথে পরিচয় হয়, সেই শুরু। তারপর অনেকবারই কিউবা গিয়েছেন তিনি। বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ১০ নম্বর জার্সি উপহারও দিয়েছেন।

অবসরের পর একসময় মাদক সেবনের জন্য মারাত্মক সমস্যায় পড়েন ম্যারাডোনা। তখন রীতিমতো বিপর্যস্ত অবস্থা তার, পাশে নেই কেউ। সেই সময় তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন ক্যাস্ত্রো। ‘লা পেড্রেরা’ ক্লিনিকে ব্যবস্থা করে দেন ম্যারাডোনার রিহ্যাবের। কিউবার স্বাস্থ্য পরিষেবার সুনাম ছিলই। ক্রমশ সুস্থও হতে থাকেন কিংবদন্তি ফুটবলার। 

ম্যারাডোনার ঘনিষ্ঠদের মতে, ক্যাস্ত্রো এগিয়ে না এলে প্রাণ বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যেত আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের। শরীর এতটাই খারাপ ছিল তার।


সেই সময় ৪ বছর কিউবায় কাটিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। মাঝে মাঝেই সকালে ম্যারাডোনার কাছে আসত ক্যাস্ত্রোর ফোন। খেলা থেকে রাজনীতি, কিছুই বাদ পড়ত না আলোচনায়। নেশায় আসক্তি কাটিয়ে ফেলতে ম্যারাডোনাকে উৎসাহ জোগাতেন ক্যাস্ত্রো। ম্যারাডোনা একবার বলেছিলেন, এমনকী রাত দুটোর সময়ও ফোন করতেন ক্যাস্ত্রো। আমিও সব সময় কথা বলতে প্রস্তুত থাকতাম। কোরো ইভেন্ট থাকলে জানতে চাইতেন, আমি যেতে চাই কি না। এগুলো আমি ভুলবো না।

ক্যাস্ত্রোর কাছে ম্যারাডোনা ঠিক কেমন ছিলেন? ক্যাস্ত্রো একবার বলেছিলেন, দিয়াগো আমার গ্রেট ফ্রেন্ড। কোনো সন্দেহ নেই যে ও অসাধারণ এক অ্যাথলিট। আর কিউবার সাথে ম্যারাডোনা বন্ধুত্ব রেখে গিয়েছে কোনো পার্থিব লাভ ছাড়াই।

২০১৬ সালে প্রয়াত হন ক্যাস্ত্রো। ম্যারাডোনা তখন কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমার কাছে উনি ছিলেন দ্বিতীয় বাবার মতো। আর্জেন্টিনায় যখন আমার সামনে দরজাগুলো বন্ধ হচ্ছিল, তখন উনি কিউবার দরজা খুলে দিয়েছিলেন। 


ক্যাস্ত্রোর মৃত্যুর পর জাতীয় শোকে যোগ দিতে ম্যারাডোনা তখন গিয়েছিলেন কিউবা। বলেছিলেন, আমি এই সময় কিউবার মানুষের পাশে থাকতে চাই। আর বিদায় জানাতে চাই আমার বন্ধু ফিদেলকে।

বন্ধুকে ভালোবেসে ম্যারাডোনাকে পায়ে কাস্ট্রোর মুখের উল্কিও আঁকতে দেখা গেছে বহুবার। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল বুধবার নিজ বাসায় মারা যান এই কিংবদন্তি। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। -আনন্দবাজার পত্রিকা

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh