প্রথম নয় মাসে রবির মুনাফা ১১৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২০, ০৩:৩৩ পিএম

বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির ওপর ভর করে তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৮ কোটি ৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। প্রতিনিয়ত উদ্ভাবন এবং অ্যানালিটিকসের উপর জোর দেয়ায় তৃতীয় প্রান্তিকে রবির রাজস্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকায়।

চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ কার্যকর কর সত্ত্বেও এই সময় রবি ১১৬ কোটি টাকা মুনাফা নিশ্চিত করেছে। এটি কোম্পানিটির দুর্দান্ত পরিচালন দক্ষতারই প্রতিফলন। তবে ন্যূনতম ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স না থাকলে এই মুনাফার চিত্র আরো ইতিবাচক হতো।

রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ১ লাখ যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ৩০ শতাংশ। এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে- দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। ৫ কোটি ১ লাখ সক্রিয় গ্রাহকের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৪৭ লাখ যা মোট গ্রাহকের ৬৯ দশমিক ২ শতাংশ।

গত প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকে ভয়েস সেবায় রাজস্বের হার ১২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ৯৭২ কোটি টাকা। তবে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় এই প্রান্তিকে এ খাতে রাজস্ব  ৮ দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। করোনা মহামারির কারণে টুজি-ভিত্তিক ভয়েস কল সেবায় নেতিবাচক প্রভাবই এর কারণ।

গত প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা সেবায় রাজস্ব ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা খাতে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ২২ শতাংশ।

গত প্রান্তিকের তুলনায় রবির রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও কোম্পানির ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দ্রুত নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য নেয়া জোর পদক্ষেপের কারণে এমনটি হয়েছে, যা এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে লকডাউনের সময় স্তিমিত হয়ে পড়েছিল।

এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবির মোট রাজস্বের পরিমাণ ৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ। এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবির ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা যথাক্রমে ২ হাজার ৪৫৮ কোটি  এবং ১১৬ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) তুলনায় এ বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ইবিআইটিডিএ এবং কর পরবর্তী মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১ দশমিক ৯ শতাংশ।

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ৮৭৫ দশমিক ১ কোটি টাকা যা এই প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এ বছরের প্রথম নয় মাসে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এই প্রান্তিকে রবি মূলধনী বিনিয়োগ করেছে ৩৬২ দশমিক ৫ কোটি টাকা। এর ফলে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে রবির মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াল ১ হাজার ৪৪১ কোটি টাকায়।

রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ার বাজারে প্রবেশের আগ মুহূর্তে তৃতীয় প্রান্তিকে লক্ষণীয় রাজস্ব বৃদ্ধিসহ মুনাফা নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এনালিটিকস-নির্ভর উদ্ভাবনীতে দৃষ্টি দেয়ার প্রতিফলন রয়েছে এই আর্থিক অগ্রগতিতে; এটি আমাদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। তবে উচ্চ কর হার আমাদের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেই চলেছে, বিশেষ করে ন্যূনতম ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স। আমরা আশা করি সরকার এই পরিস্থিতি পরিবর্তনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে যেন শেয়ার বাজারে আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের সাথে আকর্ষণীয় মুনাফা ভাগাভাগি করতে পারি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh