ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২০, ১১:১৮ এএম | আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০, ১২:০০ পিএম
ছবি: বিবিসি
ইথিওপিয়ার উত্তর টিগ্রের আঞ্চলিক রাজধানী মেকেলে দেশটির সরকারি বাহিনী সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করেছে প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদ।
টিগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) বিরুদ্ধে আগ্রাসনের ব্যাপকতা বাড়ানোর পর কিছুদিন আগে মেকেলে অঞ্চল দখল করে সেনাবাহিনী।
তবে টিপিএলএফের এক নেতা জানিয়েছেন, তারা শেষ পর্যন্ত আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়। সরকারি বাহিনীর নৃশংসতার কারণে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করাটাকেই তারা একমাত্র সমাধান মনে করছেন।
সাম্প্রতিক এই সংঘর্ষে শত শত মানুষ মারা গেছে ও কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। আঞ্চলিক দল টিপিএলএফের বিরুদ্ধে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবিই আগ্রাসনের ঘোষণা দিলে এই মাসের শুরুতে সংঘাতের শুরু হয়।
টুইটারে এক বিবৃতিতে আবিই লিখেছেন, টিগ্রে শহরের রাজধানী মেকেলে সেনাবাহিনী পুরো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমি জানাতে পেরে আনন্দিত যে আমাদের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং টিগ্রে অঞ্চলের সেনা অভিযান স্থগিত হয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী টিপিএলএফের হাতে আটক হওয়া কয়েক হাজার সেনাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে ও বেসমারিক নাগরিকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অভিযান চালানো হয়েছে। যা ধ্বংস করা হয়েছে, সেগুলো পুনর্নির্মানের ও যারা শহর ছেড়ে চলে গেছে তাদের ফিরিয়ে আনার কঠিন কাজ এখন আমাদের সামনে।
তবে ওই অঞ্চলে সংঘাতের বিষয়ে বিস্তারিত জানা কঠিন, কারণ টিগ্রের সাথে সব ধরণের ফোন, মোবাইল ও ইন্টারেনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে পাঠানো একটি টেক্সট মেসেজে টিপিএলএফ নেতা দেব্রেতসিয়ন গেব্রেমাইকেল যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য না করলেও অভিযোগ করেছেন, সরকারি বাহিনীর নৃশংসতার কারণে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করাটাকেই তারা একমাত্র সমাধান মনে করছেন।
তিনি লিখেছেন, আমাদের আত্ম-সংকল্প বজায় রাখার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার প্রশ্ন এটি।
এর আগে সংবাদ সংস্থা এএফপির একটি টিপিএলএফের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যেখানে তারা ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিমান ও গোলাবারুদ ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্বপ্রদায়কে নিন্দা জ্ঞাপন করার আহ্বান জানিয়েছিল।
মেকেলেতে হামলার জন্য তারা এরিত্রেয়ার সরকারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, টিপিএলএফ এখন পাহাড়ে পালিয়ে গিয়ে পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে পারে।
টিপিএলএফ কারা?
টিপিএলএফের যোদ্ধারা মূলত স্থানীয় মিলিশিয়া ও প্যারামিলিটারি ইউনিটের সদস্য ছিলেন। ধারণা করা হয় তাদের সংখ্যা আনুমানিক ২ লাখ ৫০ হাজার।
টিপিএলএফ নেতা গেব্রেমাইকেল বলেছেন, টিগ্রের সেনাবাহিনী তাদের অঞ্চল শাসনের অধিকার রক্ষা করার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত।
দাতব্য সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এই সংঘাতের কারণে মানবাধিকার সঙ্কট তৈরি হতে পারে ও হর্ন অব আফ্রিকা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।
ইথিওপিয়ার সরকার নিয়োজিত মানবাধিকার কমিশন টিগ্রের যুবকদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। কমিশন বলছে, মাই-কাদ্রা শহরে ৬০০’র বেশি টিগ্রের বাইরের বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে তারা। টিপিএলএফ ওই ঘটনার সাথে কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে। -বিবিসি