নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০২:৪৫ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবীন সেনা অফিসারদের বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার মতো নিজেদেরকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত থাকবে ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে। সারাবিশ্বের যেখানেই যাবে সেখানেই যেন দেশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে পার সেদিকে সর্বদা সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নতি হলে প্রত্যেকের জীবনযাত্রার উন্নতি হবে। দেশে শান্তি বিরাজ করলে সকলেই শান্তিতে থাকবে। আমরা চাই এটি মাথায় রেখে, আপনারা পাশে দাঁড়িয়ে দেশের মানুষের উন্নতিতে যথাযথ অবদান রাখবেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিস্থ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ‘রাষ্ট্রপতি প্যারেড ডিসেম্বর-২০২০ এবং ৭৯ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্স সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য যা যা প্রয়োজন সেটা করা হচ্ছে। পাশাপাশি জাতির পিতার কাঙ্খিত ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে সার্বিকভাবে কাজ করা হচ্ছে ও সেই লক্ষ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশপাশি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উন্নয়নের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ’৪১ সালে বিশ্বে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। সেই সময় দেশ পরিচালনায় আরো উঁচুমানের অফিসার হিসেবে আজকের যারা নবীন সেই তোমরাই দায়িত্ব পালন করবে। আমরা ’৪১ এর দেশ গড়ার সৈনিক হিসেবে তোমরাই দায়িত্ব পালন করবে। সে কথাটা মাথায় রেখেই নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব তোমদের পালন করতে হবে।
তিনি এ সময় শতবর্ষ মেয়াদি ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’এর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই ভূখণ্ড একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে ও জাতির পিতার এই স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আজকে আমাদের সেনাবাহিনী প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিষ্ঠার সাথে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে ও দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করছে।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের সেনাবাহিনী যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় অনেক অবদান আমাদের সেবাহিনীর অফিসাররা রেখে যাচ্ছেন ও প্রতিটি দেশেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাবাহিনীর প্রশংসা করা হচ্ছে। এই প্রশংসা যখন আমরা শুনি তখন সত্যিই গর্বে আমার বুক ভরে যায়। সেজন্য সকলকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বর্তমান কভিড-১৯ সময়কে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের জন্যই একটি ‘ক্রান্তিকাল’ আখ্যায়িত করে সরকারপ্রধান বলেন, এরফলে আমাদের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ছে, জীবনযাত্রা সীমিত হয়ে যাচ্ছে ও প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের জীবনে দুর্ভোগ আসছে। এই করোনা মোকাবিলায় আমাদের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মানুষকে সচেতন করা, তাদের পাশে দাঁড়ানো ও সাহায্য করায় বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সেবাহিনীকে ‘জনগণের সেনাবাহিনী’ আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন, এজন্য যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বা যেকোনো সমস্যায় আমি দেখেছি আমাদের সেনাসদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে ৭৯তম বিএমএ লং কোর্সের ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান সামরিক বিষয়ে সেরা পারফরম্যান্সের জন্য সেরা ‘সোর্ড অব অনার’ ও ‘সেনাপ্রধান স্বর্ণ পদক’ পান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ‘সোর্ড অব অনার’ ও ‘সেনাপ্রধান স্বর্ণ পদক’ মাহমুদুল হাসানের হাতে তুলে দেন।