গাইড-নোটের ওপর নির্ভরতা বন্ধ হোক

মো. আবদুল হাকিম জুবাইর শিক্ষার্থী, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:১৬ এএম

২০১০ সালে সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি চালু হয়। এর উদ্দেশ্যই ছিলো মুখস্থ-বিদ্যা ও গাইডবই নির্ভরতার বদলে চিন্তাশক্তির বিকাশ ঘটানো। কিন্তু সেই উদ্দেশ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে নিষিদ্ধ নোট ও গাইড বই। শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই পড়াকে গুরুত্ব না দিয়ে ঝুঁকে পড়ছে গাইড বই মুখস্থ করার প্রতি! বছরের শুরুতে নতুন বই পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় গাইড বই কেনার হিড়িক। শিক্ষকরাও তাদের নির্দিষ্ট প্রকাশনীর গাইড বই কিনতে ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করেন। দুঃখজনক হলেও সত্য, শিক্ষকরা গাইড বই থেকেই হুবহু প্রশ্ন করেন, ফলে শিক্ষার্থীরাও গাইড বই প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ভয়ঙ্কর একটি তথ্য এই যে, গ্রাম অঞ্চলের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বাইরে থেকে প্রশ্ন এনে পরীক্ষা নেয়! অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশানুযায়ী বাইরে থেকে সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্র কেনা সম্পূর্ণ নিষেধ।

১৯৮০ সালের নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি নোট বই মুদ্রণ, প্রকাশনা, আমদানি, বিক্রয়, বিতরণ অথবা কোনো প্রকারে উহার প্রচার করিতে বা মুদ্রণ, প্রকাশনা, বিক্রয়, বিতরণ কিংবা প্রচারের উদ্দেশ্যে রাখিতে পারিবেন না।’ এ আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের আওতায় নোটবইয়ের সঙ্গে গাইডবইও বাজারজাত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেন হাইকোর্ট। কিন্তু তারপরেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নোট বা গাইড বই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবছর শুধু একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া ছাড়া সরাসরি কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভর যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করতে ও সৃজনশীল পদ্ধতির সুফল পেতে এখনই গাইড বই বন্ধ করা দরকার।



সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh