পুঠিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:৪৮ পিএম
রাজশাহীর পুঠিয়া- চারঘাট উপজেলার সীমান্তে সালিশ চলাকালীন হাট-শিবপুর ও দিঘলকান্দী গ্রামবাসীর সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় দুই থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে চারঘাট থানায় হত্যা ও পুঠিয়া থানায় পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের মামলা করা হয়েছে।
এতে দুই থানায় মোট ১০০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আসামী পুঠিয়া উপজেলার দিঘলকান্দী গ্রামের। এরই মধ্যে চারঘাট থানার মামলায় ১৪ জন ও পুঠিয়া থানার মামলায় আটজনসহ মোট ২২ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের পর গ্রেফতার এড়াতে দিঘলকান্দী গ্রামের সব পুরুষ মানুষ ঘরবাড়ী ঘর ছেড়ে পালিয়ে রয়েছেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলার বাদী ওই সংঘর্ষে নিহত ভ্যানচালক রেজাউল করিমের ছেলে আব্দুল্লাহ। এই মামলার এজাহারে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো শতাধিক। শনিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে ওই মামলার ১৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পুঠিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সইবুর রহমান। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ৫৬ জন। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে আরও ৩০০ থেকে ৪০০। এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন আট জন।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে, পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, পুলিশের দায়ের করা মামলায় এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা এই ঘটনায় জড়িত, আমরা তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলে আসা বিরোধ মেটাতে শনিবার বিকেল তিনটার দিকে জেলার চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শিশুতলা-বটতলা এলাকায় সালিশ বসে। সেখানে পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম হিরা বাচ্চু ও চারঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুঠিয়া সার্কেল) আবুল কালাম সাহিদ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চারঘাট সার্কেল) মো. নূরে আলমসহ পুঠিয়া ও চারঘাট থানার ওসিরাও উপস্থিত ছিলেন।
সালিশ চলাকালীন দুপক্ষের মধ্যে সংঘাত বেধে যায়। এতে পুলিশসহ আহত হন দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে আহত ভ্যানচালক রেজাউল করিমকে (৫০) রাজশাহী মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। তিনি চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের শিবপুর এলাকার হালিম উদ্দিনের ছেলে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এলাকায়। গ্রেফতার এড়াতে বাড়ি ছেড়েছেন দুই গ্রামের পুরুষ সদস্যরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।