ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২১, ১২:১০ পিএম
করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার আটমাস পরেও মানবদেহে এন্টিবডির হ্রাস সামান্য হয় বলে প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। যদিও একেকজনের দেহে একেকরকম হারে এন্টিবডি পরিবর্তিত হয়েছে।
একটি নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা কভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন তাদের সংক্রমণের আটমাস পরেও করোনাভাইরাস থেকে শক্ত প্রতিরোধ সক্ষমতা থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণায় দেখা গেছে যে কাউকে টিকা দেয়ার পর বা সংক্রমণ থেকে সেরে উঠার পরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে প্রতিরোধক কোষ দীর্ঘকাল ধরে সক্ষম থাকতে পারে। ফলাফলটি আশাব্যঞ্জক যে- এই এন্টিবডি বছরের পর বছর ধরে শরীরে স্থায়ী হতে পারে। একইসাথে কভিড-১৯ টিকার কার্যক্ষমতার মেয়াদ নিয়ে যে শঙ্কা দেখা গিয়েছিল তাও দূর হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার লা জোলা ইনস্টিটিউটের গবেষক ও এ গবেষণা দলের সদস্য শেইন ক্রোটি বলেন, প্রথম থেকেই আমাদের আশঙ্কা ছিল- এ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে শরীরের স্মৃতি খুব ভালো নয়। তবে এখন দেখা যাচ্ছে প্রতিরোধের স্মৃতি অত্যন্ত ভালো।
গবেষণার ফলাফল ৬ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এর আগের গবেষণাগুলোতে দাবি করা হয়েছিল- কভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুতই আবারো আক্রান্ত হতে পারেন। নতুন গবেষণায় বরং উল্টো দাবি করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, খুবই ছোট একটি অংশের মানুষ দ্বিতীয়বার করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। টিকার মাধ্যমে যে একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গঠন করা সম্ভব তাও এ গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
নতুন গবেষণায় কভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ১৮৫ নারী-পুরুষের রক্তের নমুনা নেয়া হয়। তাদের বেশির ভাগই মাঝারি মাত্রার সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তাদের মাত্র ৭ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রতি ব্যক্তির ছয়দিন থেকে আটমাস ব্যবধানে তাদের রক্তে থাকা এন্টিবডির পরিমাণ হিসাব করা হয় ও ৪৩টি নমুনা ছয়মাস পরে নেয়া হয়।
এতে দেখা যায়, আটমাস পরেও তাদের দেহে এন্টিবডি সামান্য হ্রাস পেয়েছে। যদিও একেকজনের দেহে একেকরকম হারে এন্টিবডি হ্রাস পেয়েছে। তবে টি-সেলের সংখ্যা একেবারেই কমেনি বলে গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়েছে। বি-সেলের সংখ্যাও স্থিতিশীল ছিল। কখনো কখনো এর পরিমাণ বাড়তেও দেখা গেছে। অর্থাৎ মানবদেহ নতুন করে এন্টিবডি গঠন করছে।
করোনাভাইরাসের আরেকটি ধরন সার্স ভাইরাসকে কভিড-১৯-এর একদম কাছাকাছি বলে ধরে নেয়া হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবদেহে সার্সের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে ১৭ বছর। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কভিড-১৯ আক্রান্তদের দেহেও যুগের পর যুগ ধরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা স্থায়ী হবে। -ইউএনবি