দিনাজপুর পৌর নির্বাচনে লড়ছেন পাঁচ মেয়র প্রার্থী

মো. রাসেল ইসলাম

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:১০ পিএম | আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:৪১ পিএম

ছবি: উপরের বাম থেকে- রাশেদ পারভেজ, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আহম্মেদ শফি রুবেল, মো. মেহেরুল ইসলাম, মো. মেহেরুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান রানা।

ছবি: উপরের বাম থেকে- রাশেদ পারভেজ, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আহম্মেদ শফি রুবেল, মো. মেহেরুল ইসলাম, মো. মেহেরুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান রানা।

দ্বিতীয় ধাপে ১৬ জানুয়ারি দিনাজপুরে যে তিনটি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব বহন করে দিনাজপুর পৌরসভা। পৌরসভায় মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কোনো স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।

আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে দিনাজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে বর্তমান মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পাটির সভাপতি আহম্মেদ শফি রুবেল, কাস্তে প্রতীকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির অ্যাডভোকেট মো. মেহেরুল ইসলাম ও হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান রানা।

পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান রানা। তিনি এসএসসি পাশ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেদ পারভেজ মাস্টার্স ও এমবিএ পাশ, বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বি কম পাশ, জাতীয় পাটির প্রার্থী আহম্মেদ শফি রুবেল বি কম পাশ এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির অ্যাডভোকেট মো. মেহেরুল ইসলাম বি এ, এল এল বি পাশ।

বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে চারটি মামলা চলমান রয়েছে। তিনটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেদ পারভেজ একটি ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। অন্য তিন প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

নির্বাচন কমিশনে দেয়া পাঁচ প্রার্থীর হলফনামা


আওয়ামী লীগ প্রার্থী
প্রথম বারের মেয়র পদে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রাশেদ পারভেজ। তাঁর জন্ম ১৯৭৪ সালের ১০ নভেম্বর। পেশা ব্যবসা, ঠিকাদার, সরবরাহকারী ও পরামর্শক। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বার্ষিক আয় কৃষি খাত থেকে ৪৩ হাজার ২০০ টাকা। ব্যবসা, ঠিকাদার, সরবরাহকারী ও পরামর্শক থেকে কি পরিমাণ আয় হতে পারে তা উল্লেখ করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে চলমান কোনো মামলা নেই। নগদ ৬ লাখ ও ব্যাংকে নিজ নামে ৫ লাখ টাকা জমা রয়েছে। রয়েছে একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল, কৃষি জমি ৩.০০ একর এবং অ-কৃষি জমি ০.৪৪২৫ একর। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ১০ লক্ষ টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। দুইটি টিভি, দুইটি ডিপফ্রিজ, তিনটি সাধারণ ফ্রিজ, দুইটি ওভেন, একটি ওয়াশিং মেশিন, চারটি এসি, সাতটি সিলিং ফ্যান, তিনটি খাট, একটি ডাইনিং টেবিল, দুই সেট সোফা, তিনটি আলমারি, তিনটি ড্রয়ার ও একটি ডিভাইন। কোনো দায় দেনা নেই। তিনি পৌর শহরের কসবা এলাকার বাসিন্দা।

বিএনপি প্রার্থী
তৃতীয়বারের মতো মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বর্তমান মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। ১৯৬৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পেশা কৃষি ও ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় মেয়রের সম্মানীসহ ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৬ টাকা। যার মধ্যে কৃষি থেকে ৩০ হাজার, বাড়ি, এপার্টমেন্ট ও দোকান ও অন্যান্য ভাড়া ২ লাখ ৩৪ হাজার ৮৯৬ টাকা। তার হাতে রয়েছে ৩ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা রয়েছে ১০ হাজার টাকা। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাজনৈতিকসহ চারটি মামলা রয়েছে। একটি হত্যাসহ তিনটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। স্ত্রীর কাছে নগদ ১০ হাজার ও ব্যাংকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল রয়েছে। তিনি পৌর শহরের নিমনগর বালুবাড়ী এলাকার বাসিন্দা। আরো রয়েছে নামে একটি মোটরসাইকেল, দুইটি টিভি, চারটি ফ্রিজ, দুইটি মোবাইল, একটি আইপিএস, দুইটি এসি, ওয়াশিং মেশিন একটি, খাট চারটি, সুকেস তিনটি, সোফা দুইটি, ওয়ারড্রব দুইটি স্টিল আলমিরা দুইটি ডাইনিং একটি ও এক নালা শর্টগান একটি, চেয়ার ১০টি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে কৃষিজমি ১.৩৮ শতাংশ ও অকৃষি জমি ২ একর ১৮.৫ শতক।

জাতীয় পাটি
প্রথম বারের মেয়র পদে অংশ নিয়েছেন জাতীয় পাটির প্রার্থী আহমেদ শফি রুবেল। তার জন্ম ১৯৬৮ সালের এক জানুয়ারি। পেশা, ঠিকাদার। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয়ের পরিমাণ উল্লেখ নেই। তার বিরুদ্ধে চলমান কোনো মামলা নেই। নগদ ৬ লাখ ও ব্যাংকে নিজ নামে ৬ লাখ টাকা জমা রয়েছে। স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যমান ধাতু ও পাথর দিয়ে নির্মিত অলংকারাদি ২৫ হাজার টাকা, ইলেকট্রিক সামগ্রী ২০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ২০ হাজার টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি দুইতলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত। স্ত্রীর নামে রয়েছে বিভিন্ন সময় উপহার হিসাবে পাওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকার। তিনি পৌর শহরের সর্দার পাড়া মহল্লার বাসিন্দা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটি (সিপিবি)
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির অ্যাডভোকেট মো. মেহেরুল ইসলাম প্রথমবার মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। তার জন্ম ১৯৫৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। তিনি পেশায় আইনজীবী। তার বার্ষিক আয় কৃষি ও আইন পেশা থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। নগদ টাকা নেই। ব্যাংকে জমা রয়েছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। কৃষি জমি যৌথ মালিকানায় ২৮ শতক। ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল, ১০ ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রিক সামগ্রী ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার নামে কোনো মামলা নেই। তিনি পৌর শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ী এলাকার বাসিন্দা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান রানা প্রথম মেয়র পদে নির্বাচন করছেন। তার জন্ম ১৯৬২ সালের ২৫ জানুয়ারি। তিনি পেশায় গুড় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় কৃষি থেকে ৩০ হাজার ও গুড় ব্যবসা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা এবং ব্যাংকে আছে ১ হাজার ১০০ টাকা। একটি মোটরসাইকেল, কৃষি জমির পরিমাণ ৬৬ শতক ও স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি ০.০৩২৬ একর এবং এক ভরি স্বর্ণ। আসবাবপত্র ও ইলেকট্রিক সামগ্রীর বিবরণ থাকলেও সংখ্যা উল্লেখ নেই।

পাঁচ প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের তাদের সম্ভাব্য নির্বাচনী ব্যয় কী পরিমাণ করবেন তাও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী রাশেদ পারভেজ ২ লাখ টাকা, বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম ৩ লাখ টাকা, জাতীয় পাটির সভাপতি আহম্মেদ শফি রুবেল ৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির অ্যাডভোকেট মো. মেহেরুল ইসলাম ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. হাবিবুর রহমান রানা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্বাচনী ব্যয় করবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh