প্রশিক্ষণ পেলে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ সম্ভব

ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ১১:২৫ এএম

ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি

ছবি: পিরোজপুর প্রতিনিধি

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে জাহাজ নির্মাণ। এখানের বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে ছোট-বড় নানা আকৃতির জাহাজ। বানানো হচ্ছে লঞ্চ, কার্গো জাহাজ, উন্নতমানের ট্রলারসহ নানা নৌযান। 

এসব ডকইয়ার্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থেকে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো মানুষের। তবে সম্ভাবনাময় এই খাতে শ্রমিকরা সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ পেলে আর্ন্তজাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। অবশ্য এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান স্থানীয় প্রশাসন।

নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, ভৌগলিক কারণে পিরোজপুরের সাত উপজেলার চারদিকেই রয়েছে নদী। এরমধ্যে নেছারাবাদ-স্বরূপকাঠি উপজেলার সন্ধ্যা নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে জাহাজ নির্মাণের বেশ কয়েকটি ডকইয়ার্ড। এসব ডকইয়ার্ডে কম খরচে বানানো হচ্ছে লঞ্চ, কার্গো জাহাজ, উন্নতমানের ট্রলারসহ নানা নৌযান। তাই সাশ্রয়ী হওয়ায় জাহাজ কিনতে ও মেরামত করতে দূর দূরান্ত থেকে আসেন ব্যবসায়ী ও জাহাজ মালিকরা।


প্রায় ৩৩ বছর আগে এই জাহাজ নির্মাণের যাত্রা শুরু হলেও, সম্প্রতি এটি বাণিজ্যিকভাবে প্রসারিত হয়েছে। আর এর সাথে যুক্ত থেকে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো মানুষের। কিন্তু শ্রমিকরা বলছেন, ডকইয়ার্ডে সারাদিন শ্রম দিয়েও পাচ্ছেন না ন্যায্য মজুরি।

শ্রমিকরা আরো বলেন, শুধু মজুরি কম নয়, এসব কাজে ঝুঁকিও রয়েছে অনেক। তবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নেই তেমন কোনো ব্যবস্থা। আর ডকইয়ার্ডের মালিকরা বলছে, শুধু অভিজ্ঞতা নয়, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ পেলে আর্ন্তজাতিক মানের জাহাজও তৈরি করতে পারবেন তারা। পিরোজপুরের সন্ধ্যা নদীর দুই পাড়ে ছোট-বড় ২৮টি ডকইর্য়াডে ৯ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। একটি বড় আকারের জাহাজ তৈরিতে সময় লাগে ৯ থেকে ১০ মাস। 

এদিকে ডকইর্য়াডগুলো আরো উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, এখানকার জাহাজ নির্মাণ একটি সম্ভাবনাময় শিল্প। এখানে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে এ উন্নতি কাক্ষিত মাত্রার নয়। এখানে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, যা ব্যক্তি পর্যায়ে সম্ভব নয়। সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণদানের ব্যবস্থা হলে এ শিল্প আরো সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে।


স্বরূপকাঠীর বুক দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর তীর আর সোহাগদল, কালিবাড়ী, বরইকাঠী, বালিহারী, তারাবুনিয়ার খালের তীরে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় ১৫টির মতো ডকইয়ার্ড। এসব ডকইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের বিভিন্ন ধাপ সেটিং, কাটিং, ওয়েলডিং, রঙের কাজে জড়িত হাজারো মানুষ।   

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh