দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর: কৃষিমন্ত্রী

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৫৪ পিএম

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশ প্রতি বর্গকিলোমিটারে সর্বাধিক ঘনবসতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও ব্রিয়ের বিজ্ঞানীদের কল্যাণে দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বনির্ভর অবস্থানে রয়েছে।

এখন নতুন চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে, আর সেটি হলো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষির যথাযথ যান্ত্রিকায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণ এবং ধান উৎপাদন তথা সার্বিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে কৃষকের জন্য লাভজনক করা। এ জন্য বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে গাজীপুরস্থ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা ২০১৯-২০-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেজবাহুল ইসলাম।

ব্রিয়ের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- এমিরেটাস প্রফেসর কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএপুলের সদস্য ড. এমএ সাত্তার মন্ডল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, ফাও (এফএও) প্রতিনিধি বরার্ট ডি ম্যাম্পসন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম। কর্মশালায় ‘গবেষণা অগ্রগতি ও অর্জন ২০১৯-২০’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রিয়ের পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণপদ হালদার।  

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, দেশের বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ধান উৎপাদন আরো বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য ব্রিয়ের বিজ্ঞানীদের কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি ধানি জমিতে ফসলের নিবিড়তা বাড়ানো, ফসলের উন্নত প্রক্রিয়াজাতকরণ, উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন নিরাপদ রফতানি সম্ভাবনাময় ধানের জাত উদ্ভাবনের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। এক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি। আমরা আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছি। বঙ্গবন্ধু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বাংলার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি কথা বলেছেন। আর এ জন্য দরকার খাদ্য নিরাপত্তা।

তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি অপরিহার্য। আমরা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ ও বানিজ্যিকী করে কৃষিকে লাভজনক করতে চাই।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি বান্ধব, তিনি কৃষক দরদী, তিনি কৃষকের কল্যাণ ও তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি চান। তার নেতৃত্বের কারণেই দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পন্ন হয়েছে। আগামীতে কৃষি ক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে কৃষি উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। আমরা চাই কৃষক ভাইয়েরা ন্যায্য মূল্য পাক, চালের মূল্যও সন্তোষ জনক থাকুক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আগামীদিনে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে ব্রি, বারি, বিএআরসি, ডিএই, ইরিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিগত এক বছরে ধান গবেষণাও সম্প্রসারণ কাজের অর্জন ও অগ্রগতির বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তী ছয়দিন ধরে চলবে কর্মশালার বিভিন্ন কারিগরী অধিবেশন। কর্মশালার কারিগরী অধিবেশনগুলোতে গত এক বছরে ব্রির ১৯টি গবেষণা বিভাগ ও নয়টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা ফলাফল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সামনে তুলে ধরা হবে।

ব্রিয়ের মহাপরিচালক জানান, গত দুইবছরে মোট ১১টি উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। এ নিয়ে ব্রি উদ্ভাবিত মোট ধানজাতের সংখ্যা হলো ১০৫টি। এরমধ্যে বেশকয়টি প্রতিকূল পরিবেশ সহনশীল এবং উন্নত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ধানের জাত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাতগুলো হলো ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৯১, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৫, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৮ ও ব্রি ধান৯৯।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh