নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:৫৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) এ বিষয়ে চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারের সাথে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ কথা জানান তিনি।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, আমরা প্রথম প্রান্তিকে প্রত্যাবাসন শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যবস্থাপনার জন্য আরো কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। তাই আমরা দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রত্যাবাসনের কথা বলেছি। তারা এতে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সময় রাখাইনে আন্তর্জাতিক সংস্থার উপস্থিতি বিষয়ক প্রস্তাবে চীন ও মিয়ানমার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি আছে, তা যদি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়, সেখানে ১০ লাখের বেশিমানুষকে নিয়ে যেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। গত তিন বছরে ৯০ হাজার নতুন বাচ্চাও জন্মগ্রহণ করেছে।
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দুপুর ২টা থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে সচিব পর্যায়ের এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মোমেন। চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুও জাওহুইয়ের সভাপতিত্বে বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উপমন্ত্রী হাউ দো সুয়ান।
ভার্চুয়াল ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসনের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসকারী প্রায় আট লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে ইতিমধ্যে যাচাই করা ৪২ হাজার জনকে দিয়ে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা বলা হয়েছে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা গ্রামভিত্তিক প্রত্যাবাসনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। কারণ এতে নিজেদের গ্রামের বা এলাকার সবাই একসাথে গেলে আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের সাথে নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করবে।
রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমারের আইন-কানুন মেনে চলে- বৈঠকে এ বিষয়ে আশ্বাস চায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) উপস্থিতির বিষয়টিও উল্লেখ করে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের দেশে কোনো সন্ত্রাসীর আশ্রয় নেই। কিছু অপরাধী থাকলেও, তাদের কোনো ধর্মীয় বা রাজনৈতিক পরিচয় নেই।
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরো চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।