নোয়াখালীতে নিক্সনের কুশপুত্তলিকা দাহ

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১২ পিএম

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও নোয়াখালীর মানুষদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে রূপালী চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা নিক্সন চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী বাবুল, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি গোলাম ছরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাহেদুর রহমান তুহিন, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু, চরপার্বতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম তানভীর, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না প্রমুখ।

এর আগে আবদুল কাদের মির্জা ১৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনী সভায় কাদের মির্জা সাংসদ নিক্সনকে জড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

ওই বক্তব্যে মির্জা কাদের অভিযোগ করেন, সাংসদ নিক্সন তাঁকে চুনোপুঁটি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এর জবাবে মির্জা কাদের বলেন, ‘নিক্সন চৌধুরী সাহেব আপনি বলেছেন চুনোপুঁটিদের কথা কে শোনে। নিক্সনকে জিগাই আপনার বয়স কত। আমার রাজনৈতিক বয়স আপনার বয়সের চেয়ে বেশি। আপনি ত্যাগী নেতা কাজী জাফরউল্ল্যাহকে হারাইয়া নির্বাচিত হয়েছেন ভোট চুরি করে।’

পরে ১৭ জানুয়ারি ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, ‘পাগলারে (কাদের মির্জা) পাবনায় আটকান। নইলে এমন গণধোলাই খাবেন, পালানোর পথ পাবেন না। পাগলদের স্থান রাস্তায় না। আমি সরকারকে অনুরোধ করি, পাগলকে পাবনা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’

নিক্সন বলেন, আমি ওই পাগলকে চ্যালেঞ্জ করে বলব- গত দুইবার সংসদ নির্বাচনে এলাকার জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে আমাকে এমপি বানিয়েছে। এখানে তারা নৌকার বিপক্ষে নয়। দুর্নীতিবাজ পানামা কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কাজী জাফরউল্লাহর বিরুদ্ধে আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে।

নোয়াখালীর ওই নেতাকে উদ্দেশ করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘পাগলারেও আমি চিনি না, জীবনে দেহি নাই, জীবনে যাই নাই নোয়াখালী। আরে মিয়া নেতা হইতে চান? পরিচিতি চান? পাগলামি কইরা নেতা হওয়া যায় না। আপনাকে প্রমাণ করতে হবে পাগলা আমি আপনারে কিছু কইছি কি না? সরকারের উচিত এই সব পাগল যথাশীঘ্রই পাবনায় পাঠানো। না হলে গণধোলাই এমন খাবে যে চেহারা চেনা যাবে না।’

পরদিন ১৮ জানুয়ারি কাদের মির্জা বলেন, ‘নিক্সন চৌধুরী বলেন, আমি পাগল। আমি না কি তার কথা বলে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা করছি। আমিতো আমার কর্মকাণ্ড দিয়ে ইতোমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছি। শেখ পরিবারের লোক এমপি নিক্সন চৌধুরীর মুখে এসব কথা মানায় না। নিক্সন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। এরা কী করে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হয়?’

কাদের মির্জা বলেন, ‘কত বড় ঔদ্ধত্য সে দেখায়। ১৬ তারিখের নির্বাচনে মানুষ ৭৭ শতাংশ ভোট দিয়ে তাদের জবাব দিয়ে দিছে। এর (নিক্সন চৌধুরী) জবাবও মানুষ দিয়ে দিবে। এই ছেলের বিষয়ে আমি আর কী মন্তব্য করব।’ তিনি বলেন, ‘সে তো দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জাফরউল্ল্যাহ সাহেবের মতো ভালো লোকের বিরুদ্ধে ভোট করেছে এবং অনিয়ম করে ভোটে জিতেছে।’

নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘নিক্সন চৌধুরী এসি ল্যান্ডকে গালি দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইউএনও। এখন হাইকোর্টে জামিনে আছে। এই ছেলে এলোমেলো কথাবার্তা বলে, তাকে কী জন্য যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঢুকানো হয়েছে, আমি জানি না।’

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh