সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:৫৭ এএম
নির্বাচনী সভা চলাকালে সাবেক এমপির বাসভবনে হামলা, প্রতিপক্ষ প্রার্থীর হামলায় মৃত্যু ও নেতা-কর্মীদের আহত করার মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠিত হয়েছে পৌর নির্বাচন। যদিও সরকারি দলের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী প্রতিবেশি দেশের তুলনায় আমাদের দেশের নির্বাচনকে ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়েছেন।
একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থা কীভাবে এগোবে, কতখানি শান্তিপূর্ণ হবে- এটা অন্য কোনো দেশের সাথে তুলনীয় বিষয় নয়। নির্বাচনি পরিবেশকে অহিংস ও শান্তিপূর্ণ করে তোলা, নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা ও আগ্রহ ধরে রাখা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়টি অনুধাবনে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টরা উদাসীন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাশিত, একইসাথে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হওয়াটাও বাঞ্ছনীয়। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, অর্থবহ ও শঙ্কামুক্ত করা সম্ভব না হলে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য।
নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও ইভিএম পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা স্বীকার করেছে। এ পদ্ধতির ত্রুটিপূর্ণ দিকগুলো সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনও অবগত। তা সত্ত্বেও ব্যয়বহুল এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অন্যদিকে এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। সাধারণ ভোটারদের প্রশিক্ষিত না করেই ইভিএম পদ্ধতি প্রচলনে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টরা সমালোচিতও হয়েছেন। সীমিত আকারে চালু হলেও ভোটারদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, যন্ত্র ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে হবে গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করার উপায় সম্পর্কে। কেবল স্থানীয় নয়, জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য।
নির্বাচনের প্রতি জনআস্থা যেন সংকুচিত হয়ে না পড়ে। নির্বাচন গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ভূলুণ্ঠিত হবে।