খুবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:৫৪ পিএম
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণকারী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও দুই শিক্ষককে অপসারণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১২তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ‘উসকানি’ দেয়ার অভিযোগ এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেয়েও ওই তিন শিক্ষক তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশ না করায় এবং অবাধ্যতা, গুরুতর অসদাচারণ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনবিরোধী কার্যক্রম ছাড়াও একাধিক অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বরখাস্ত শিক্ষক হলেন- বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল ফজল। অপসারণকৃত শিক্ষক দুইজন হলেন- ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করা হলে ওই কর্মচারী ভবিষ্যতে অন্য কোনো সরকারি চাকরিতে অথবা কোনো আইন বলে বা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো সংস্থায় নিয়োগ লাভের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে চাকরি থেকে অপসারিত হলে কর্মচারী পুনর্নিয়োগ লাভের অযোগ্য হবেন না।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১১তম সভার সিদ্ধান্তে ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপর্যুক্ত শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদের স্ব স্ব নামে কেন তাদের বরখাস্ত ও অপসারণ করা হবে না মর্মে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য চিঠি দেয়া হয়।
ওই তিন শিক্ষক নির্ধারিত ২১ জানুয়ারি দুপুরের মধ্যে ওই চিঠির জবাব দেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তারা জবাব দিলেও কোনো রকম দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা চাননি। নিয়ম অনুযায়ী শনিবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২১২তম সভায় পূর্ববর্তী ২১১তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ও তিন শিক্ষককে দেয়া আত্মপক্ষ সমর্থনে জবাব নিয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনা করা হয়। শেষে সিন্ডিকেট তাদের চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১ ও ২ জানুয়ারি পাঁচ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। বেতন-ফি কমানো, আবাসনসংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবি ছিল শিক্ষার্থীদের। এর প্রায় ৯ মাস পর গত ১৩ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের ‘উসকানি’ দেয়ার অভিযোগে ওই তিন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনদিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই চিঠির জবাব দেয়া হলে গত ৯ নভেম্বর আরেকটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। ২৩ নভেম্বরের ওই চিঠি জবাব দেয়া হলে ২৪ নভেম্বর ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।