২০০৮ সালের চেয়েও মন্দাবস্থায় চাকরির বাজার

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:৪১ পিএম

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলেছে, চলমান করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজারে এক বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। বর্তমানে ২০০৮ সালের মন্দাবস্থার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সংস্থাটি বলেছে, বেকারত্ব ও কর্মঘণ্টা কমে যাওয়াসহ বিভিন্নভাবেই ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রায় ২২৫ মিলিয়ন পূর্ণ কর্মঘণ্টার চাকরির বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার সময়ে যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল তার চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি।

ইউএন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আইএলও মনিটর: কভিড-১৯ অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক’ অনুসারে এর ফলে বিশ্বব্যাপী ৮ দশমিক ৩ শতাংশ আয় কমেছে। সহযোগিতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের আগে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার আয় কমেছে। যা বিশ্বব্যাপী মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

যদিও এ ক্ষেত্রে ২০২১ সালেও উচ্চ মাত্রার অনিশ্চয়তা আছে। আইএলও পূর্বানুমান করেছে কভিডের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ায় বেশিরভাগ দেশ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামূলকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী পুনরুদ্ধার দেখতে পাবে।

আইএলও তিনটি পরিস্থিতির কথা বলছে- এই বছরের মধ্যে কর্মঘণ্টার প্রাথমিক পূর্বানুমানে ৩ শতাংশ কম, হতাশামূলক পূর্বাভাসে ৪.৬ শতাংশ ক্ষতি ও আশাবাদের মধ্যেও বিশ্ব অর্থনীতি এখনো ১.৩ শতাংশ কর্মঘণ্টা হারাবে।

আইএলওর মহাপরিচালক গে রাইডার বলেন, ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধারের লক্ষণগুলোতে উৎসাহজনক, তবে সেগুলো অনেকটা অত্যন্ত অনিশ্চিত। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে কোনো দেশ বা গোষ্ঠী একা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে পারবে না।

তিনি বলেন, আমরা একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিস্থিতির মধ্যে আছি। যার একটি পথ ক্রমবর্ধমাণ বৈষম্য, অস্থিতিশীলতা, অসম, অস্থিতিশীল, পুনরুদ্ধার ও আরো সংকটের সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাবে। অন্যটি আরো উন্নত হিসেবে গড়ে উঠা, কর্মসংস্থান, আয় ও সামাজিক সুরক্ষা, শ্রমিকদের অধিকার ও সামাজিক সংলাপকে অগ্রাধিকার দেয়াসহ একটি মানবিককেন্দ্রিক পুনরুদ্ধার ব্যবস্থার দিকে নিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, একটি স্থায়ী, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার চাইলে নীতি নির্ধারকদের অবশ্যই এই পথটি বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা আইএলও জানিয়েছে, খাত ও গ্রুপের ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে তরুণ কর্মীরাও আছেন। বিশ্বব্যাপী পুরুষদের ৩.৯ শতাংশের বিপরীতে নারীদের কর্মসংস্থান কমে ৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে অল্প বয়স্ক শ্রমিকরা হয় চাকরি হারিয়েছে, শ্রম খাত থেকে বাদ পড়েছেন বা চাকরি পেতে বিলম্ব হয়েছে।

সংস্থাটির মতে, চাকরি হারানোদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের ৩.৭ শতাংশের তুলনায় (১৫-২৪ বছর বয়সী) তরুণদের কর্মসংস্থান হারানোর ৮.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা একটি হারানো প্রজন্মের বাস্তব ঝুঁকিতে ফেলেছে।

আবাসন ও খাদ্য পরিষেবাগুলো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে কর্মসংস্থানের হার গড়ে ২০ শতাংশেরও বেশি কমেছে।

অন্যদিকে, ২০২০ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকে তথ্য, যোগাযোগ, অর্থ ও বীমা খাত কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। -ইউএনবি

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh