বিপর্যয়ের মুখে কুয়াকাটায় বিনিয়োগকারীরা

খান রুবেল

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৪:৩৭ পিএম

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) গাটা পর্যটন খাতের অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এর প্রভাবে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় হোটেল-মোটেলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চরম লোকসানের মুখে পড়েছে। বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর প্রশাসনের সহায়তায় পুনরায় স্বাভাবিক হলেও নেই আগের মত দেশি-বিদেশি পর্যটকের সমাগম।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবি এ পর্যটন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে দেড়শতাধিক হোটেল মোটেল রয়েছে। বন্ধকালীন সময়ে এসব হোটেল-মোটেলে প্রায় ২০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। লোকসানের মুখে পড়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও। অনেক পর্যটক নির্ভরশীল ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার চিন্তা করছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে এবার ব্যবসায় যে ধ্বস নামছে, তা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। চলতি বছরের শুরুতে পর্যটনে নতুন গতি এসেছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস দ্বিতীয় দফায় মহামারি রূপ নেওয়ায় শঙ্কায় সেই গতি আবার থেমে গেছে। বর্তমানে হোটেল, মোটেল, রেস্ট হাউজ ও রিসোর্টে  পর্যটকদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে কয়েক গুন।

কুয়াকাটার একাধিক হোটেল মোটেল মালিকরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ট্যুরিস্ট গাইড, পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ট্যুর অপারেটররা সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ট্যুরিস্টদের উপর নির্ভরশীল নিম্ন আয়ের মানুষগুলো একেবারেই কর্মহীন হয়ে পড়েছিল। এখনো তাদের সংসার চালানো নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

সরেজমিনে কুয়াকাটার চরগঙ্গামতি, লাল কাঁকড়ার চর, ঝাউবন, মিশ্রিপাড়া বৈদ্যবিহার, ইকোপার্ক, রাখাইন তাঁতশিল্প পল্লী, মিষ্টি পানির কূপসহ দর্শনীয় স্পটগুলোতে দূরের কোনো পর্যটক নেই। যারা আছে তারাও কাছাকাছি এলাকার। বেলাভূমিতে ফুচকা, চটপটি, বাদাম, চানাচুর বিক্রেতাদেরও বেচা বিক্রি কমে গেছে বলে জানালেন চটপটি বিক্রেতা আলাউদ্দিন কবির।


কুয়াকাটার ফটোগ্রাফার মো. তৈয়ব মিয়া বলেন, ‘লকডাউনের সময় আমরা একেবাইে বেকার হয়ে পড়েছিলাম। এখানে অন্তত দুই শত ফটোগ্রাফার রয়েছেন। আগের মত পর্যটক না থাকায় আমাদের আয়ও কমে গেছে। এরমধ্যে অনেকে পেশা বদল করে ইজিবাইক চালাচ্ছে বলে জানান ওই ফটোগ্রাফার।

কুয়াকাটা টুরিজম অ্যাসোশিয়েশনের (কুটুম) সিনিয়র সহ-সভাপতি হোসাইন আমির বলেন, কুয়াকাটার মাঝারি ব্যবসায়ীদের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে চলতি বছরের শুরুতে পর্যটনে নতুন গতি ফিরতে শুরু করেছে।

কুয়াকাটা সমুদ্র বাড়ির রিসোর্ট পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, ‘আগের মত পর্যটক নেই। রুম বুকিং ও কমে গেছে। তবে বিশেষ কোনো দিন কিংবা শুক্রবার পর্যটকদের চাপ বেশি থাকে।

কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোনে আনু বলেন, বর্তমানে কুয়াকাটায় বিনিয়োগকারীদের ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা যাচ্ছে। করোনা গোটা পর্যটন খাতের অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘কুয়াকাটায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শতাধিক হোটেল মোটেল রয়েছে। যেখানে অন্তত এক হাজারের মতো কর্মচারী কাজ করছে। তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণে আমাদের তথা মালিকপক্ষকেই দেখতে হচ্ছে, যা আমাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh