নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:০৮ এএম
সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)।
একইসাথে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি- শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জামুকার ৭২তম সভায় এদের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি। এই খুনের নেপথ্যে রয়েছেন জিয়াউর রহমান। জামুকার সভায় এদের মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেয়া হয়। এছাড়া শরিফুল হক ডালিম ‘বীর উত্তম’; নূর চৌধুরী ‘বীর বিক্রম’, রাশেদ চৌধুরী ‘বীর প্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিন ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান।
জামুকার সুপারিশ অনুযায়ী, এখন এদের খেতাব বাতিল করে গেজেট জারি করা হবে। এর ফলে জিয়াউর রহমানসহ এই পাঁচজন ও তাদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সেনা সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে খুন হন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর পাঁচ ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছেন। এরমধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্র ও নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থায় করছেন। এছাড়া শরিফুল হক ডালিম, কর্নেল রশীদ, মুসলেহউদ্দীন রিসালদার বিভিন্ন দেশে পালাতক রয়েছেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বরাবরই অভিযোগ করা হয়। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হওয়া আত্মস্বীকৃত চার খুনির খেতাব বাতিলের বিষয়টি জামুকার গতকালের সভায় উত্থাপন করা হয়।
সভায় শাজাহান খান প্রশ্ন তোলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের খেতাব বাতিল করা হলে কেন জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করা হবে না। তিনি তার এই বক্তব্যের সপক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরেন। পরে জামুকার সভার সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ অন্য সদস্যরা শাজাহান খানের বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।