বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:০১ পিএম
সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বাগেরহাটে প্রতিমা বিক্রির ধুম পড়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ক্রয়-বিক্রয়। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বাগেরহাট শহরের বনিক পট্টি এলাকায় শ্রী শ্রী রাধেশ্যাম মন্দির চত্বরে প্রতিমা বিক্রি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী পূজার দিন সকাল পর্যন্ত চলবে এই প্রতিমা বিক্রি। ৫ দিনে কয়েক হাজার প্রতিমা বিক্রি হবে এই হাটে। আকার ও গঠন ভেদে ৩০০ থেকে হাজার টাকা দামে বিক্রি হয় একএকটি প্রতিমা। মা সরস্বতীর ভক্তরা পছন্দমত প্রতিমা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন এখান থেকে।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেখা যায় ছোট বড় অসংখ্য প্রতিমা নিয়ে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এ আসছেন প্রতিমা কিনতে।
প্রতিমা বিক্রেতা রাম প্রসাদ পাল বলেন, প্রতিবছরই আমরা এই বাজারে প্রতিমা বিক্রি করতে আসি। দুই মাস আগে থেকে আমরা প্রতিমা গুলো প্রস্তুত শুরু করি। এবছর সহস্রাধিক প্রতিমা নিয়ে এসেছি। এই প্রতিমা বিক্রির অর্থ দিয়েই আমাদের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে।
প্রতিমা ব্যবসায়ী বিধান পাল, গণেশ পাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই হাটে প্রতিমা বিক্রি করি। এটা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভালবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গা। বিদ্যা ও সঙ্গীতে পারদর্শী এবং মায়ের কৃপা পাওয়ার জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই পূজা করে থাকেন। যেহেতু মায়ের পূজা এই জন্য ক্রেতারা তেমন দরাদরি করে না। মোটামুটি মানসম্মত দাম হলে নিয়ে যান।
প্রতিমা ক্রেতা প্রমথ রঞ্জন শিকদার বলেন, ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে সরস্বতী পূজা করে আসছি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রতিমা ক্রয় করেছি। যতদিন বেচে থাকব পূজা চালিয়ে যাব।
দাসপাড়া এলাকার মৌসুমি চক্রবর্তী বলেন, হাটে এসে প্রতিমাগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে। সরস্বতী পূজা করার জন্য একটি প্রতিমা ক্রয় করেছি। তবে গতবছরের তুলনায় এবারে প্রতিমার দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্যবসায়ী তাপষ কুমার পাল বলেন, পাঁচ শতাধিক প্রতিমা নিয়ে আসছিলাম বাগেরহাটে। আমার অধিকাংশ প্রতিমা বিক্রি হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বাঘমারা গ্রামের মুকুন্দ কুমার মন্ডল বলেন, প্রতি বছর বিভিন্ন হাট থেকে প্রতিমা ক্রয় করে বাড়িতে নিয়ে পূজা অর্চনা করি। তবে এবার বাগেরহাট শহরের বাজারে এসে দেখেছি প্রতিমা গুলোকে আকর্ষণীয় করে তৈরি করেছেন কারিগররা। আমি মুগ্ধ হয়েছি মার এত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর প্রতিমা দেখে। আমিও বাড়িতে পূজা করার জন্য একটি প্রতিমা ক্রয় করেছি।
প্রতিমা ক্রয় করতে আসা বাগেরহাটের বিএসসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝিমি মন্ডল বলেন, মায়ের পূজা করলে বাচ্চাদের লেখা পড়ায় উন্নতি হয়। সাথে সাথে সংগীত চর্চায়ও মনোনিবেশ করতে পারে। তাই আমার বাড়িতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর সরস্বতী পূজা করা হয়। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রতিমা ক্রয় করেছি।
হিন্দু ধর্ম মতে বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী খ্যাত সরস্বতী দেবী। সনাতন ধর্মের লোকেরা বিদ্যার্জন ও সঙ্গীতে পাণ্ডিত্য অর্জনের জন্য শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা করে থাকেন। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি ব্রাহ্মণভোজন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও সর্বজনীন পূজামণ্ডপগুলিতে পূজা অর্চনা করা হয়।