সুপেয় পানির সংকট পাহাড়িদের

সমির মল্লিক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:০৪ পিএম

খাগড়াছড়ি দীঘিনালা সড়কের পাশে লাগায়া নয় মাইল এলাকার প্রায় ১১টি পাড়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট চলছে। পাড়ার নিচে ঝিরি থেকে সংগ্রহ করতে হয় খাওয়া ও রান্নার পানি। তীব্র কষ্টে পানি জুটলেও তা নিরাপদ নয়। বাধ্য হয়ে অপরিষ্কার পানি সংগ্রহ করতে হয়। সম্প্রতি নয় মাইল দুর্গম এই পাড়ার বাসিন্দারা প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে পানি সংগ্রহ করেন।

স্থানীয় বাবলি ত্রিপুরা জানান, বছরের শুষ্ক মৌসুমে পানির তীব্র কষ্ট হয়। গ্রামের মেয়েরা সকাল ও বিকেলে পানি সংগ্রহ করে। পানি নিয়ে উঁচু পাহাড়ে উঠতে খুব কষ্ট হয়; কিন্তু বিকল্প কোনো উপায় নেই। কুয়োয় পর্যাপ্ত পানি জমা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হয়। সামনের দিনগুলোতে পানির আরও কষ্ট হবে।

মনু ত্রিপুরা জানান, ‘আমরা যুগের পর যুগ পানির জন্য কষ্ট করছি। পাড়ার প্রায় ৫০টি পরিবার দুই কিলোমিটার হেঁটে একটি কুয়ো থেকে পানি সংগ্রহ করি। অনেক সময় কুয়োতেও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। পানি না নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়। এছাড়া ঝিরির পানি অপরিষ্কার ও ময়লা হওয়ায় পান করার কারণে নানা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হতে হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য গণেশ চন্দ্র ত্রিপুরা জানান, আমাদের এলাকায় ১১টি পাড়ায় প্রায় দুই হাজার মানুষের বসবাস। এখানে বেশির ভাগ এলাকায় বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। ঝিরি ও ঝরনা থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কয়েকবার গভীর নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও পাথুরে পাহাড়ের কারণে নলকূপ স্থাপন সম্ভব হয়নি। এসব এলাকায় ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে কুয়ো থেকে পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। পাড়া সংলগ্ন এলাকায় পানির ট্যাংক বসিয়ে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখলে পানির সংকট দূর হবে।

খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজির উদ্দিন জানান, ‘সমগ্র বাংলাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর প্রতিটি ইউনিয়নের ২৬টি পয়েন্টে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে। আগামী ৫ বছর এই প্রকল্প চলমান থাকবে। এতে করে পানির সংকট মিটে যাবে। কোথাও যদি পাথুরে পাহাড়ের কারণে নলকূপ স্থাপনে বিঘ্ন ঘটে সেক্ষেত্রে স্থান পরিবর্তন করে নলকূপ স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া আরও একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহের কাজ চলমান রয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh