শিশুদের তৈরি শহীদ মিনার

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:০৪ এএম

একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের আগ্রহের কমতি নেই। স্কুল ও পাড়া-মহল্লায় ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে তাদের অস্থায়ী শহীদ মিনার বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। রাত ১২টা থেকে অনুভূতির শহীদ মিনারে ফুল দিতে হবে। সেজন্যই যত আয়োজন তাদের। 

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় প্রতি বছরই প্রতিটি মহল্লার অলি-গলিতে শিশুরা কাদামাটি, কলাগাছ, বাঁশের কঞ্চি ও রঙিন কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। তাদের এই শহীদ মিনার বানাতে সময় লাগে একদিন। ২১ তারিখ সকাল থেকে সেই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় তারা। এসব শিশুর বয়স ৫-১২ বছরের মধ্যে। দ্বিতীয় থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারা। 

এ বছরও শহীদ মিনার বানানোর প্রস্তুতি চলছে। বড়দের কাছ থেকে তারা অর্থ সংগ্রহ করছেন। গেন্ডারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম জানায়, এবারো শহীদ মিনার বানাবো। ভাষার জন্য আমাদের বড় ভাইরা জীবন দিয়েছেন এটা কম কথা নয়। আমরাও তাদের স্মরণ করতে চাই, শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চাই। তাই ছোট ভাই বন্ধুদের নিয়ে এই আয়োজনের প্রস্তুতি। 

শুধু পুরান ঢাকা নয়, সারাদেশেই এরকম অস্থায়ী শহীদ মিনার বানায় শিশুরা। জয়পুরহাট সদর উপজেলার খঞ্জনপুর বাজারের একটি পরিত্যক্ত ক্লাব ঘরের জায়গায় ইট, মাটি আর পরিত্যক্ত টাইলস দিয়ে প্রতিবছর শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানকার শিশুরা। এক সপ্তাহ ধরে এই শহীদ মিনার বানায় তারা। নিজেদের পরিশ্রমে বানানো সেই শহীদ মিনারের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে একদল কোমলমতি শিশু। তাদের কেউ শিশু শ্রমিক, কেউবা শিক্ষার্থী।

স্থানীয় খঞ্জনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিরব জানায়, তাদের মহল্লার ভূমি অফিসের শহীদ মিনারটি কয়েক বছর থেকে ভেঙে পড়ে আছে। এটি কেউ মেরামত করে না। শহীদ দিবসে সবাই শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়; কিন্তু আমাদের শহীদ মিনার ভাঙা থাকায় আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারি না। তাই আমরা কয়েকজন মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতি বছর পরিশ্রম করে ইট, মাটি ও টাইলস এবং সামান্য সিমেন্ট কিনে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করি। এতে আমাদের খরচ হয় তিনশ’ টাকা। যা আমরা সবাই মিলে দিই।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh