বেলায়েত হুসাইন
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:০৪ এএম | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:২৬ এএম
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহর সিলেটে উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি প্রতিষ্ঠিত হয় জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.) বা সিলেট দরগাহ মাদ্রাসা। উপমহাদেশের বিশিষ্ট বুজুর্গ ও ইসলাম প্রচারক শাহজালাল (রহ.)-এর সমাধি প্রাঙণে ১৯৬১ সালে বুজুর্গ আলেম মাওলানা আকবর আলী (রহ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন। মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.)-এর নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় তিনি তা প্রতিষ্ঠা করেন। মাজারের মুতাওয়াল্লি এ জেড আব্দুল্লাহ চৌধুরী দরগাহ প্রাঙ্গণে মাদরাসার জন্য ভূমি দান করেন। এ ছাড়া দরগাহ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদান রাখেন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার প্রবীণ শিক্ষক মাওলানা আরশাদ আলী ও মাওলানা সায়্যিদ আলী কাছাড়ি (রহ.)। প্রতিষ্ঠাকালে প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিলো মাদ্রাসায়ে তা’লিমুল কোরআন। ১৯৭৫ সালে নাম বদল করে নতুন নাম দেয়া হয় মাদ্রাসায়ে কাসিমুল উলুম। অতঃপর ১৯৮৪ সালে মাদ্রাসার স্থলে জামিয়া শব্দ প্রতিস্থাপন করা হয়।
প্রাথমিক স্তর থেকে দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) পর্যন্ত কওমি শিক্ষাধারার নিয়মিত সব বিভাগ রয়েছে এখানে। পরে উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা অনুষদ (ইফতা) এবং উচ্চতর হাদিসচর্চা বিভাগও (উলুমুল হাদিস) খোলা হয়েছে। বাংলা, আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষায় ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষা কারিকুলাম অনুসারে পাঠদান করা হয়। মাসিক আল-কাসিম নামে একটি সাময়িকী আছে মাদ্রাসার। তা ছাড়া সমৃদ্ধ একটি পাঠাগারের পাশাপাশি রয়েছে প্রকাশনা বিভাগও।
মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব ও বাইতুল মোকাররমের সাবেক খতিব মাওলানা ওবায়দুল হক (রহ.)-এর পুত্র মাওলানা আতাউল হক জালালাবাদী কালের কণ্ঠকে জানান, তিনটি পৃথক ভবনে এখানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী আবাসিক পড়ালেখা করে। এতিম ও দরিদ্রদের ফ্রি শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ আছে। এখানে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ৩৫ জন। অন্যান্য স্টাফ ২০ জন। বর্তমান মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহিব্বুল হক।
এখানের উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন মাদরাসার সাবেক মুহতামিম মুফতি আবুল কালাম জাকারিয়া (রহ.), দারুল উলুম করাচির ফতোয়া বিভাগের মুফতি আব্দুল মান্নান, আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাওলানা আরিফ রব্বানি খান প্রমুখ।
জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.) বৃহত্তর সিলেট এবং এ অঞ্চলে ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইলমে নববী (সা.)-এর রৌশনি বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।