মৌচাষে ঝুঁকছেন তরুণরা

মো. রাসেল ইসলাম

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০২ পিএম

নিজ মৌখামারে মধু উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেছেন দিনাজপুরের মোসাদ্দেক হোসেন। পড়াশোনা শেষ করে চাকরির দিকে না ঝুঁকে তিনি এই চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করে মৌ পালন কর্মসূচি দিনাজপুর কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তৈরি করেন মৌ খামার। তার মৌ খামার থেকে বাণিজ্যিক মধু উৎপাদন শুরু হয়েছে। বিশুদ্ধ ও মানসম্মত মধু উৎপাদন করায় সাড়া পড়েছে তার খামারের। তরুণরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মৌ খামারের দিকে ঝুঁকছেন বলে জানান তিনি।

মোসাদ্দেক হোসেন জানান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে এমএসসি পরীক্ষা শেষে বসে না থেকে মৌ পালনে আগ্রহী হয়ে উঠি। বিসিক থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। খামার স্থাপন করে মধু উৎপাদনে সফল হই। গড়ে তুলি সমবায়। খামার স্থাপনে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে পাঁচজনের। নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাস উৎপাদিত হয় মধু। সরিষা, কালোজিরা, ধনিয়া, লিচু, মিষ্টি কুমড়া, তিল, সাজনা, খলিসা, কেওড়া, গেওয়া, ধইঞ্চা থেকে উৎপাদিত হয় মধু।

মোসাদ্দেক আরও জানান, অ্যাপিস মেলিফেরা প্রজাতির মৌকলনী পালন করা হয়, তা থেকেই উৎপাদিত হয় মধু। মৌমাছি ফুল থেকে নেকটার ও পরাগ রেণু সংগ্রহ করে। নেকটারে জলীয় অংশ মৌমাছির পাকস্থলি ও মৌ কোষে জলীয়বাষ্প আকারে উড়ে গিয়ে নেকটার গাঢ় মধুতে পরিণত হয়। মৌসুমে ১০/১২ বার উৎপাদিত হয় মধু। প্রতিটি মৌবাক্সে ৮-১০টি মৌ ফ্রেমে মৌমাছি থাকে। প্রতি মৌবাক্স থেকে গড়ে বছরে ৬০-৭০ কেজি মধু উৎপাদিত হয়।

তিনি আরও জানান, দেশে চার প্রজাতির মৌমাছির দেখা মেলে। অ্যাপিস ম্যালিফেরা, অ্যাপিস ডরসাটা, অ্যাপিস ফ্লোরিডা, অ্যাপিস সেরিনা। অ্যাপিস ম্যালিফেরা প্রজাতির মৌমাছিই শুধু বাণিজ্যিক উৎপাদনে সক্ষম। স্বল্পসংখ্যক খামারী অ্যাপিস সেরিনা পালন করে থাকে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন মৌপালন কর্মসূচি দিনাজপুরের টেকনিশিয়ান কর্মকর্তা রুহুল আমীন জানান, বিসিক নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মোসাদ্দেক পড়াশোনা শেষে এ কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে, যা তরুণদের আগ্রহী করে তুলছে। শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে এলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি পণ্যে পরিণত হবে মধু।

বিসিকের টেকনেশিয়ান এক্সপার্ট হাফিজুর রহমান জানান, মোসাদ্দেকের আগ্রহ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তার খামারটিকে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনও মিলছে। তার সফলতায় অনেকেই মৌচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh