নক্ষত্র, ছায়াপথ ও আকাশ প্রেমিক মেহনাজ করিমি

মহিউদ্দীন মোহাম্মদ

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:২৬ এএম

মেহনাজ করিমি

মেহনাজ করিমি

মেহনাজ করিমি আধুনিক ও সমসাময়িক ইরানি শিল্পী। তার রয়েছে দুই দশকের সফল অভিজ্ঞতা। তিনি মূলত ফ্লুইড আর্ট (Fluid Art), রজন শিল্প (Resin Art), এক্রিলিক পেইন্টিং ও গ্লাস পেইন্টিং বিশেষজ্ঞ। 

তবে অন্যদের থেকে তার কাজে বিশেষ ভিন্নতা রয়েছে। আকাশ, ছায়াপথ, মেঘ ও সাগরের প্রতি তার তীব্র ভালবাসা। একারণে তিনি নয়নাভিরাম শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যান দর্শকদের। 

জিওড রজন শিল্প (Geode resin ) ও মিশ্র মিডিয়া কোলাজের মাধ্যমে প্রাচীর, বাটি, ডিশ ও সাধারণত ট্রেতে প্রচুর আর্টওয়ার্ক করেন। 

মেহনাজ করিমির জন্ম ১৯৮৪ সালে ইরানের রাজধানী তেহরানে। কৈশোর থেকে শিল্পের প্রতি তীব্র আকর্ষণ। একারণে তেহরানের জোহরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাফিক্সে গ্রাজুয়েশন করেন। এছাড়া তিনি মাস্টার্স করেছেন ও রাসায়নিক বিষয়ে দক্ষতাও অর্জন করেছেন। গ্লাস পেইন্টিং বিষয়ে তার রয়েছে ১৩ বছরের অজ্ঞিতা আর পেশাদার বিমূর্ত শিল্পী হয়ে উঠেছেন ছয় বছর ধরে।

তিনি সালামা পোর্টালের সাথে সম্প্রতি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্য ভাষান্তর করেছেন মহিউদ্দীন মোহাম্মদ।


ইরানের অন্যতম প্রতিভাবান ও একজন গ্ল্যামারাস শিল্পীর সাথে কথা বলতে পেরে সত্যিই আমরা খুশি

মেহনাজ করিমি: আমিও গর্বিত, আনন্দিত।

ইরান শিল্পী, কবি ও দার্শনিকদের দেশ। সেই দেশের একজন শিল্পী হিসাবে আপনার অনুভূতি ব্যক্ত করুন

মেহনাজ করিমি: আমি খুব গর্বিত যে আমি এমন একটি দেশে জন্মগ্রহণ করেছি, যার রয়েছে হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইতিহাস। তাছাড়া আমার পূর্বপুরুষদের রয়েছে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড ও শিল্পের প্রতি অনুরাগ।

নক্ষত্র, ছায়াপথ,উন্মুক্ত আকাশ ও প্রকৃতির প্রতি যে টান তা আপনার শিল্পকর্মে প্রতিফলিত। এই সীমাহীন উৎসগুলিই কি  মনে হয় আপনার কাজে বিশেষ অনুপ্রেরণা যোগায়?

মেহনাজ করিমি: হ্যাঁ, অবশ্যই, যখন প্রকৃতির উপাদানগুলো ভালোবাসা, স্বপ্ন ও কবিতার সাথে একাকার হয়ে যায় তখন নিঃসন্দেহে তা আরো দুর্দান্ত ও শক্তিশালী শিল্প হয়ে ওঠে।


এতদূর যে এসেছেন তো আপনার চলার পথটি কেমন ছিল ও কী কারণে আপনি রজন শিল্পকে (Resin Art) বেছে নিয়েছেন?

মেহনাজ করিমি: প্রতিদিন আমি শিল্পের নতুন নতুন কাজের সাথে পরিচিত হই এবং প্রতিদিন আরো নিখুঁত ও পেশাদার হয়ে উঠি। রঙ প্রয়োগে ব্যপক স্বাধীনতা ভোগ করা যায়- এ মাধ্যমে। এটা খুব কমনীয় শিল্প।

ইরান ছাড়া এমন কোনো দেশ আছে যেখানে আপনার আত্মা শান্তি খুঁজে পায়?

মেহনাজ করিমি: হ্যাঁ, আমি যেখানেই ভালোবাসা পাই সেখানে শান্তি বোধ করি ও আমি এই জায়গাটিকে আমার দেশ বলে মনে করি। আমি যেখানে আছি তা আমার কাছে স্বর্গ বিবেচিত। জানালা, চিন্তাধারা, হাওয়া-বাতাস, ভূ-মন্ডল এসবই আমার জন্য। যদিও মাঝে মাঝে নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হই।

অনবরত চর্চা করেন এমন বিভিন্ন শিল্প ফর্মগুলোতে আপনি কীধরণের সরঞ্জাম ও করণকৌশল প্রয়োগ করেন?

মেহনাজ করিমি: রজন শিল্পে বিভিন্ন কৌশল রয়েছে যা আমাকে আগ্রহী করে। তবে আমি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নতুন কৌশল ও পদ্ধতিগুলো ব্যবহারের চেষ্টা করি।


যিনি রজন শিল্প শিখতে চান তার জন্য সেরা পরামর্শ কী আপনার ?

মেহনাজ করিমি: নিজেই নিজের শিল্পকর্মে ডুবে যাওয়ার সাহস করতে হবে। 

রঙ বা নক্ষত্র কি আপনাকে সুখী করে তোলে?

মেহনাজ করিমি: রঙ আমাকে বরাবরই আনন্দ দেয়। প্রফুল্ল মনে ছোটবেলায় আমি নক্ষত্রের অনুসরণ করতাম। তাদের বেশিরভাগকে আমার বলে মনে হতো। আমার মনে আছে চোখধাঁধানো সৌন্দর্য অবলোকন করে আমি নক্ষত্রের প্রেমে পড়েছিলাম। আমার বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারকারা আমার কাছে আরো ঝকঝকে হয়ে উঠল এবং আমি আমার রঙের মাধ্যমে সেই সুন্দর তারকাগুলো পুনরায় তৈরি করার চেষ্টা করেছি।এই রঙিন জগত তৈরি করতে যারা আমাকে সাহায্য করেছে তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।


আপনি কি মনে করেন যে, নক্ষত্র ও ছায়াপথের যারা প্রেমে পড়েন, তারা আসলে বিচ্ছিন্ন ও একাকি?

মেহনাজ করিমি: না, আমি মনে করি যারা ছায়াপথ ও তারকাদের পছন্দ করেন তারা সবসময় একটি কেমিস্ট্রি দেখতে পান। আর সেটা এমন এক শিক্ষা উপস্থিত করে, যা থেকে আমরা বুঝতে পারি ওটা একধরণের সমাজ। যা কখনো একে অপরের ক্ষতি করে না ও সবাই সুন্দরভাবে জীবনযাপন করে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh