রফিক মজিদ
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২১, ১০:১৯ এএম
শেরপুরের চরাঞ্চলের কৃষকদের আশার আলো জাগাচ্ছে সবজি জাতীয় ফসল ‘বেবি কর্ন’। বেবি কর্ন শুধু সবজিই নয় এর সবুজ গাছ গরুর জন্য উন্নত পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চরাঞ্চলের পরিত্যক্ত বেলে মাটি এ ফসলের জন্য উপযোগী।
শুধু দেশেই নয় বিদেশেও এ ফসলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও বেবি কর্ন রফতানি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব।
শেরপুরের চরাঞ্চলে বেবি কর্ন ফসল সম্পর্কে জমশেদ আলী মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক পার্থ সারথী কর জানায়, এটি একটি স্বল্প মেয়াদি ফসল, যা অর্থকরী ফসল হিসেবে চাষ করা যেতে পারে। এটি খুব পুষ্টিকর সবজি। প্রয়োজনীয় ফাইবার এবং প্রোটিন ছাড়াও, বেবি কর্ন অত্যাবশ্যক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। বেবি কর্ন সমৃদ্ধ ফলিক এসিডের উৎস। এটি সবজি এবং সালাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অভিজাত চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোতে বেবি কর্ন স্যুপ একটি জনপ্রিয় খাবার। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোতে বেবি কর্ন অত্যন্ত জনপ্রিয় খাদ্য। এসব দেশে বেশির ভাগ বেবি কর্ন চীন ও ভারত রফতানি করে। বাংলাদেশ থেকেও বেবি কর্ন রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারি ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, তিনি তার জমিতে তিন বছর যাবত বেবি কর্ন চাষ করে আসছেন।
তিনি জানান, চরাঞ্চলের এক একর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন খরচ হয় ৪৫ হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় ৩৬ হাজার টাকা। কৃষকদের এ ফসলে লস হলেও কেবলমাত্র গো-খাদ্য খড়ের চিন্তা করে এ বোরো আবাদ করতে বাধ্য হয়। তবে বেবি কর্ন আবাদ করে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে অনেক লাভবান হয়েছেন।
বেবি কর্ন বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. আব্দুল কাদের জানান, চরাঞ্চলের মাটি এ বেবি কর্ন চাষাবাদে খুবই উপযোগী। ধান চাষ করলে যেখানে প্রতিদিন দুইবার পানি দিতে হয়, সেক্ষেত্রে বেবি কর্ন চাষে মৌসুমে মাত্র তিন বার পানি দিলেই হয়। তাই চরাঞ্চলের যেসব পতিত জমি রয়েছে বা অন্য ফসল করে কৃষক কোনো লাভের মুখ দেখতে পায় না, তাদের জন্য বেবি কর্ন চাষ খুবই লাভজনক। যদিও এ বেবি কর্নের এখনো পাইকারি ও খুচরা বাজার গড়ে ওঠেনি। তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন চাইনিজ ও ফাস্টফুড রেস্তোরাঁয় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।