চিকিৎসাবঞ্চিত বেনাপোলবাসী

নজরুল ইসলাম

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২১, ০৪:০৫ পিএম

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর এলাকা বেনাপোলে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও গড়ে ওঠেনি সরকারি-বেসরকারি কোনো হাসপাতাল।

কাগজ-কলমে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও নেই তার অস্তিত্ব। চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত পাসপোর্টযাত্রী, বন্দর ব্যবহারকারী ও এলাকাবাসী। বঞ্চিত হচ্ছে ১ লাখ ২ হাজার পৌর নাগরিক। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে কাস্টমস ও বন্দরে কর্মরত ১০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী। গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরে হাসপাতালের অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে বেনাপোল বন্দর এলাকায় একটি উন্নতমানের হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক।

ভারতের সঙ্গে এ বন্দর দিয়ে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। বিভিন্ন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। বন্দর ও পৌর এলাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। তাদের ৩৮ কি. মি. দূরে জেলা শহরে যেতে হয় চিকিৎসাসেবা নিতে। জরুরি সেবা দিতে না পেরে অনেক সময় বেনাপোলের বাইরে হাসপাতালে যেতে যেতে রোগী মারা যায়। গত ৬ মাসে এ এলাকায় ৭৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৯১ জন। আর বেনাপোল পৌরসভা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে নিহত ১৩০ জনকে মৃত্যু সনদ দিয়েছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা বলেন, বন্দরে একটি হাসপাতাল, একটি অ্যাম্বুলেন্সের কথা বন্দর পরিচালককে একাধিকবার বলা হয়েছে। আমাদের শ্রমিকরা মালামাল লোড আনলোড করতে গিয়ে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। পঙ্গু হয়ে বাড়িতে অসহায় অবস্থায় রয়েছেন অনেকে। চিকিৎসা করতে না পেরে অনেকে ধুকে ধুকে মরছেন। বন্দর কর্তৃপক্ষের স্বার্থে এখানে একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সম্পাদক আজিম উদ্দিন বলেন, বেনাপোল বন্দর এলাকায় একটি হাসপাতাল খুবই জরুরি। আমাদের ট্রাকের অনেক চালক দুর্ঘটনায় শিকার হলে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। পথে অনেকে মারাও গেছেন। এখানে হাসপাতাল হলে বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিটি সংগঠনসহ এলাকাবাসী তাদের সেবার জায়গাটা খুঁজে পাবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি, দ্রুত একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হোক।

বেনাপোল কাস্টম ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সুজন বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর; কিন্তু দুঃখজনক এখানে কোনো হাসপাতাল নেই। আমরা সরকারের কাছে এখানে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল দ্রুত নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি। যশোর সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দরে শুধু করোনার জন্য পাসপোর্টযাত্রী ও ট্রাক ড্রাইভারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। বেনাপোলে যদি বড় আকারে একটি হাসপাতাল করা হয়, তাহলে বন্দর ব্যবহারকারীসহ এ অঞ্চলের সব মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। উচ্চপর্যায়ে পত্র দিয়েছি বেনাপোলে একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল করার জন্য।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh