চতুর্মুখী চ্যালেঞ্জের নিউজিল্যান্ড সফর

মোয়াজ্জেম হোসেন রাসেল

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২১, ০৯:৫১ এএম

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখনো জয়শূন্য লাল সবুজের দল। করোনাভাইরাসের কারণে এবার আরো বেশি চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের জন্য। 

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে ভয় জাগানিয়া খবর হচ্ছে, সর্বশেষ অষ্ট্রেলিয়াকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়ে এ নিয়ে টানা পাচঁটি সিরিজ জিতেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। তবে দেশ ছাড়ার আগে ও নিউজিল্যান্ডে গিয়েও বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা অন্তত একটি জয়ের ব্যাপারে নিজেদের আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়েছে। 

কিন্তু সেটি কতটা সম্ভব সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পার্শ্ববর্তী দেশ অস্ট্রেলিয়া যেখানে পাত্তা পায়নি সেখানে বাংলাদেশের অবস্থা কী হতে পারে সেটি সহজেই অনুমেয়। 

যদিও ক্রিকেটারদের অহেতুক চাপ না দিতে অনুরোধ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সিরিজে কোনো টেস্ট না থাকলেও রয়েছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ৫০ ওভারের ম্যাচে সমীহ জাগানো দল হলেও ২০ ওভারের ক্রিকেটে এখনও টেস্টের মতো এখনো শিখছে বাংলাদেশ। এই যেমন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে উল্টো টেস্টে নিজেদেরকেই হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে। সেই ক্ষত শুকানোর আগেই উড়াল দিতে হয়েছে। সেখানে প্রথম সাতদিন হোম কোয়ারেন্টিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিতে হয়েছে খেলোয়াড়দের। করোনাকালে প্রথম কোনো দেশ সফর করার কারণে অনেক নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে তাদের। এখন অনুশীলন শুরু করে মাঠের লড়াইয়ে ফেরার চ্যালেঞ্জ সামনে।

বাংলাদেশের মতো দলের জন্য সবসময়ই নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন একটি দুশ্চিন্তার নাম। তার ওপর করোনার কারণে যে ধকল সয়ে মাঠে নামতে হয়েছে সেটিও মাথায় রাখার মতো বিষয়। প্রথমদিনের অনুশীলনে তাই ছয়জন বোলার দেয়া হয়েছে স্বাগতিক দলের পক্ষ থেকে। নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘অন্য দলগুলোর মতো আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানকার কন্ডিশনের সাথে নিজেদের মানিয়ে নেয়া। এই সময়টা ক্রিকেটাররা সবাই ভালোভাবে ব্যবহার করছেন। এখানকার সুযোগ সুবিধাও অনেক চমৎকার। আর কোয়ারেন্টিনে হোটেলবন্দি থাকলেও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়াতে সেটি কাজে দিয়েছে’।

বায়ো বাবল সুরক্ষার মধ্যে নিজেদের তৈরি করতে হবে। এখানেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত সাফল্য পেয়েছে বলে জানা গেছে। মানসিকভাবে আরো বেশি পোক্ত করতে একাকীত্ব জীবন কাজে দিয়েছে বিরাট কোহলির দলের জন্য। নিজ দেশে খেলার আগে অস্ট্রেলিয়াতে সাফল্যের কারণ হিসেবেও এটিকে দেখা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্যও একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন জাতীয় দলের এই সাবেক অধিনায়ক। 

সবমিলিয়ে আবহাওয়া আর কন্ডিশনের সাথে আরো কিছু বিষয় সবসময়ই চ্যালেঞ্জের থাকে। যার মধ্যে উইকেটগুলোর আচরণও চিন্তার কারণ। পেস ও বাউন্সি উইকেটের কারণে স্বাভাবিক খেলা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। সে কারণেই নিউজিল্যান্ড সফরে এবার বাংলাদেশ দলে নেয়া হয়েছে সাতজন পেস বোলার! 

তবে এবার দেশটির উইকেট সম্পর্কে প্রচলিত এই ধারণায় পরিবর্তন দেখছেন মাশরাফি। নিউজিল্যান্ডে তিনি ফ্ল্যাট উইকেটের প্রত্যাশা করেছেন। কঠিন এই সফর নিয়ে তার মূল্যায়ন ছিল অনেকটা এরকম, ‘নিউজিল্যান্ড সফরটা সবসময়ই কঠিন আর চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে এবার বেশি চ্যালেঞ্জ সাকিব আল হাসানকে না পাওয়া। আগে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া গেলে সবাই উইকেট সিমিং কন্ডিশন বলে আগেভাগেই ভয় পেয়ে যেত। কিন্তু আসলে এইগুলা তো আরো ২০ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। এখন তো ওখানে ফ্ল্যাট উইকেট। এখানে ৩০০ রানও উঠছে প্রায়শই। তাই খেলায়াড়দের ওপর আস্থা রাখতে হবে আর কোনো অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না’। 

কিউইদের বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলা ১২টি ওয়ানডে ও চারটি টি-টোয়েন্টিতে বাজেভাবে হেরে গেছে টাইগাররা। এবার অবশ্য ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখছেন ক্রিকেটাররা। নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে একটি জয় নিয়ে দেশে ফিরতে চায় তারা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh