জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২১, ০২:২৯ পিএম
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে জয়নুল আবেদিনের শিমুল বাগানে ফুল ফুটেছে। শিমুল বাগানটির সঙ্গে মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছে মেঘালয় পাহাড়, বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদীর তীরের প্রকৃতির অপরূপ সৌর্ন্দয। যা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
প্রয়াত বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদিন ২০০২ সালে তিনি উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে বালু আবারিত ৯৮ বিঘা অনাবাদি জমি ক্রয় করে এ বাগানে সারিবদ্ধভাবে ৩ হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন। প্রতি বছরই বসন্তের আগমনে তিন হাজারের অধিক শিমুল গাছে ফুল ফুটে। লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও আহ্বান করছে প্রকৃতিপ্রেমী, পর্যটক ও সৌন্দর্যপিপাসুদের। আর এখন ফুটন্ত ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে আশপাশের দর্শনার্থীরাও আসতে শুরু করেছেন। ছুটির দিনসহ বিশেষ দিনগুলোতে বেড়াতে আসেন তারা এবং উপভোগ করেন শিমুল বাগানের অপার সৌন্দর্য, বারেকটিলা ও যাদুকাটা নদী।
দর্শনার্থী সাকুরা আক্তার বলেন, প্রকৃতির রূপলাবণ্যে সজ্জিত শিমুল বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি। খুব মুগ্ধ হচ্ছি। কতই না সুন্দর। মন জুড়িয়ে যায়।
স্থানীয় মুড়ি বিক্রেতা মুজিবুর জানান, ফাল্গুনে এই বাগান দেখতে মানুষের ঢল নামে । ফাল্গুন মাসজুড়েই শিমুল ফুল লাল পাঁপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলায় পর্যটকদের। ফলে বাগানটাকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে রেখেছে কেউ। সে সময় সপ্তাহের সাত দিনেই মানুষের ঢল নামলেও সরকারি ছুটির দিন পা ফেলার জায়গা থাকে না শিমুল বাগানে। ফলে প্রকৃতিপ্রেমী, পর্যটক ও সৌন্দর্যপিপাসুদের এক মিলনমেলায় আমাদেরও বেচাকেনা বেড়ে যায়।
এদিকে, আগতদের সুবিধার্থে বাগানের মালিকপক্ষ বাগানের ভেতরে একটি ছোট খাবার হোটেল, চেয়ার ও টেবিল বসিয়ে বসার ব্যবস্থা করেছে। এতে করে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা উপকৃত হবে বলে জানান শিমুল বাগানের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান রাকাব উদ্দিন।
তিনি আরও জানান, বসন্তের শুরুতেই কিছু কিছু গাছে সীমিত আকারে শিমুল ফুল ফুটেছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে পুরো বাগানে ফুল ফুটে উঠবে। পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনের জন্য স্থানীয়ভাবে সুসজ্জিত ঘোড়ার ওপর উঠে ছবি তোলার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া তাদের সুবিধার জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমির উদ্দিন জানান, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে আরও বেশি পর্যটক আসবে এখানে। এ ছাড়াও এই বাগানটি পর্যটকদের স্বার্থে আরও আধুনিকায়ন করলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের মাঝে আকর্ষণ বাড়বে।
বাগানে আসা পর্যটক প্রীনিতা প্রিয়াংকা বলেন, নদী, পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলনমেলা এখানে। বাগানের ভেতরটায় গেলে এক অন্য রকম ভালো লাগার জন্ম নেয়। চোখ বুজলেও টের পাওয়া যায় এসব দৃশ্যপট। হারিয়ে যাই অন্য এক অজানা ভুবনে।