তিস্তার বালুচর ফসলে সয়লাব

এস কে শাহেদ

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২১, ০৪:৪৪ পিএম

তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে উঠেছে প্রান্তর জুড়ে বালুচর। চরে ভুট্টা  সবজিসহ নানা সফল ফলাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের সংগ্রামী কৃষক। গেল বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন স্বপ্ন বুননে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের তিস্তা চরাঞ্চলের চাষিরা।

তিস্তা, ধরলা আর সানিয়াজান নদী বেষ্টিত লালমনিরহাটের প্রায় অর্ধশত চরাঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে তিস্তায় রয়েছে ৩৪টি চর। এসব বালু চরে চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক পরিবারের সদস্যরা। কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবারের সকল সদস্য মিলে একযোগে কৃষি কাজে মাঠে নেমে পড়েন। পুরুষদের সঙ্গে পরিবারের নারী সদস্যরাও গৃহস্থলীর কাজ শেষ করে কৃষি কাজে যোগ দেন। চরাঞ্চলের বালুময় জমিতে কঠোর পরিশ্রম করে ফসল ফলানোই একমাত্র আয়ের উৎস চরবাসীর। তাই ফসলের ভালো ফলন পেতে দিনভর মাঠে কঠোর পরিশ্রম করেন তারা।

গতবারের বন্যা আর ভারি বৃষ্টিতে আমন ধানের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। অনেক কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে পড়েছে। তাই খাদ্যের জোগান ও সংসারের খরচ মেটাতে বালুময় জমিতে ফসল ফলানোর সংগ্রামে নেমে পড়েছেন চরবাসী। চরাঞ্চলের এসব বালু জমিতে প্রচুর সেচ দিয়ে আলু, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, তামাক, মরিচ, রসুন ও পেঁয়াজসহ নানান জাতের সবজি চাষাবাদ করেন চরবাসী।

কালীগঞ্জ উপজেলার তিস্তা চরাঞ্চল চর বৈরাতি গ্রামের আমিনুল, রেহানা কৃষক দম্পতি জানান, গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান ছিল আমাদের। বাপ-দাদার ভিটে-মাটি সব বিলীন হয়ে গেছে তিস্তায়। কিছুই অবশিষ্ট নেই। যা আছে সবই বালুর চর। সংসার চালাতে ওই বালু চরে পানি সেচ দিয়ে ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ ও আলুর চাষাবাদ করছি। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে নিবিড় পরিচর্যা করছি এসব ফসলের।

সদর উপজেলার আনন্দ বাজার এলাকার তিস্তা গোবর্ধন চরের কৃষক জয়নাল আবেদীন (৫০) বলেন, এক সময় অনেক জমি-জমা ছিল। যা কেড়ে নিয়েছে তিস্তা। শীত মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় সেই জায়গা আবার জেগে উঠেছে। আর সেখানে এখন তামাক, ভুট্টা ও পেঁয়াজ চাষ আবাদ করছি। এসব ফসল বিক্রি করেই চালাতে হবে সারাবছরের সংসার খরচ।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh