বিএইচবিএফসির ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন (বিএইচবিএফসি) ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে।

এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

অনুষ্ঠানে বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো. আফজাল করিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী ও তপন কুমার ঘোষ। আরো সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক, উপ-মহাব্যবস্থাপক, অফিসার কল্যাণ সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ ও সদর দফতরসহ মাঠ পর্যায়ের সবস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

প্রধান অতিথি ড. সেলিম উদ্দিন বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ৪৬৮২ দিন অর্থাৎ প্রায় ১৩ বছর কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করা, অন্যায়-অবিচার মুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত ও উন্নত সোনার বাংলা গড়ার। তিনি ছিলেন শোষিত বঞ্চিত মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল। তিনি হলেন জাগ্রত ইতিহাস একটি জাতির জন্মদাতা। একটি স্বাধীন জাতিসত্তার অপরিমেয় অহংকার বর্ণিল ঐশ্বর্য। তাই বঙ্গবন্ধু বাঙালি একসূত্রে গাঁথা। জাতির পিতা যে অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র মুক্ত ও উন্নত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএইচবিএফসির পরিচালক ড. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। তিনি তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির জন্মলগ্নের কিছু বাস্তবতা, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দার্শনিক ভিত্তি ও বঙ্গবন্ধু কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন ও বর্তমান বাস্তবতা কেমন- এই তিনটি বিষয় চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করেন। 

তিনি বলেন, সাম্যের বাংলাদেশ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও মানুষে মানুষে ভালোবাসার বাংলাদেশই হলো বঙ্গবন্ধুর মূল দর্শন। তাই সবাইকে বঙ্গবন্ধুর দর্শন বাস্তবায়নে কাজ করার আহবান জানান। 

বিশেষ অতিথি পরিচালক তপন কুমার তার বক্তব্যে বলেন, আমরা যে যেখানে আছি তা কেবল বাংলাদেশ স্বাধীন হবার কারণেই সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, কাজেই তার প্রতি আমাদের ঋণ কখনো শেষ হবে না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার আহবান জানান। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম আলোচনার শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের সব সদস্য ও স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী  মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা ও পৃথিবীর মানচিত্রে পেয়েছি একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের স্বার্থকতা চমৎকারভাবে বিশ্লেষণ করেন। তিনি তার ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাঙালি জাতি হাজার বছর ধরে এই ভাষণের অপেক্ষায় ছিলেন। এজন্য তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। এ ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতির অন্তরের অন্তঃস্থলে গুমরে মরা স্বাধীনতার আকাক্ষার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন তিনি। 

তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভূয়সী প্রসংশা করেন। তিনি অর্থনৈতিক মুক্তি বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা রেখে বিএইচবিএফসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। 

ভার্চুয়াল সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক অরুণ কুমার চৌধুরী ও মো. আতিকুল ইসলাম। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন জোনাল ম্যানেজার ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. খালেদুজ্জামান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. খাইরুল ইসলাম, সহকারী মহাব্যবস্থাপক আনন্দ কুমার ঘোষ, শাখা ম্যানেজার ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আবুবকর সিদ্দিক খান, অফিসার কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মো. মাহফুজুর রহমান, বিএইচবিএফসির বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি তারেক ইমতিয়াজ খান ও বঙ্গমাতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. আবু সাঈদ। 

সঞ্চালক হিসেবে সভাটি পরিচালনা করেন বিএইচবিএফসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক জনাব মো. নজরুল ইসলাম ও সিনিয়র অফিসার ফাইজা নোশিন।