আমার বহু দিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো: মোদি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২১, ০২:২৭ পিএম

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: পিআইডি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে গিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরে পূজা দিয়ে বলেছেন, বহু দিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো।  

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত একংবিশ শতকের এই সময়ে অগ্রগতি লাভ করবে। দুই দেশ বিশ্বকে শান্তি ও ভালোবাসার পথ দেখাবে।

আজ শনিবার (২৭ মার্চ) টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলায় মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ওড়াকান্দি মন্দিরে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা দেন ও পরে মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময়ে অংশ নেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একভাবে এই স্থান ভারত ও বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থস্থান। এই দিনের পবিত্র এ মুহূর্তের প্রতিক্ষা আমার বহু বছর ধরে ছিল। ২০১৫ সালে যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার বাংলাদেশে আসি, তখনই এখানে আশার ইচ্ছে ব্যক্ত করেছিলাম। আমার সেই প্রত্যাশা, সেই কামনা আজ পূর্ণ হলো। 

তিনি বলেন, আমি নিয়মিতভাবে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুকামীদের থেকে ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছি। তার পরিবারের সদস্যদের ঘনিষ্ঠতা পেয়েছি। আজ এ ঠাকুরবাড়ির দর্শন লাভের জন্য তাদের আর্শীবাদের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করি।

তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে ১৩০ কোটি ভারতীয় জনতার ভালবাসা নিয়ে এসেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পূর্ণ হওয়ায় সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। গতকাল ঢাকার প্যারেড গ্রাউন্ডে সংস্কৃতি অনুষ্ঠান দেখেছি। যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

তিনি আরো বলেন, এখানে আসার আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিক্ষেত্রে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব আর তার ওপর দেশের লোকেদের বিশ্বাস ও ভালোবাসা সত্যিই অতুলনীয়।

মোদি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। এই ঠাকুরবাড়ি দুই দেশের আত্মিক সম্পর্কের তীর্থস্থান। আমাদের সম্পর্ক মানুষের সাথে, আমাদের সম্পর্ক মনের সাথে। ভারত ও বাংলাদেশ নিজেদের বিকাশ ও প্রগতির চেয়ে বিশ্বের উন্নতি দেখতে চায়। হানাহানি-নৃশংসতামুক্ত বিশ্ব দেখতে চায়। প্রেম ও ভালোবাসাময় পৃথিবী দেখতে চায়। আর একই স্বপ্ন ছিল হরিচাঁদ ঠাকুরের। এই মূল্যবোধের কথাই তিনি বলেছিলেন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মোদি কাশিয়ানীর ওড়াকান্দিতে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি সংলগ্ন মাঠের অস্থায়ী হ্যালিপ্যাডে অবতরণ করে। 

এ সময় তাকে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ডঙ্কা-কাঁসা বাজিয়ে বরণ করে নেন ঠাকুর বাড়ির মতুয়ারা। সেখানে তিনি পূজা-অর্চনা করেন। পরে তিনি ঠাকুর বাড়ির সদস্য ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেন।।

মতুয়া মতবাদের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান হল গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ওড়াকান্দি। ওই গ্রমের মন্দিরটি পরিচিত মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদার তীর্থস্থান হিসেবে। ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় তিন কোটির বসবাস পশ্চিমবঙ্গে। ব্রাহ্মণ্যবাদ যাদের নিম্নবর্ণের অস্পৃশ্য জাত করে রেখেছিল, মূলত তারাই মতুয়া মতবাদের অনুসারী। তারা একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী; নারী ও পুরুষের সমান অধিকার এবং বিধবা বিবাহকে উৎসাহিত করা হয় এ মতবাদে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh