নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২১, ০৮:৫৪ পিএম
নওগাঁর আত্রাইয়ে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ‘এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো. লি.’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘যা জমা দেবেন এক সপ্তাহের মধ্যে তার দ্বিগুণ ফেরত পাবেন’ এমন প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হতো।
অভিযোগ পেয়ে রবিবার রাতে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইকতেখারুল ইসলাম পুলিশকে সাথে নিয়ে অভিযান চালান। ওই সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির অফিস থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
আত্রাই থানায় লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন, উপজেলার খোলাপাড়া নামক স্থানে প্রায় তিন মাস আগে অফিস খোলে ‘এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো. লি.’। ইন্স্যুরেন্সের আড়ালে এলাকার তরুণীদের সাবলম্বী করার প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় হিসাব খুলতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৬ শতাধিক নারী সেখানে সঞ্চয় হিসাব খুলেন। এদিকে সঞ্চয়ী মহিলাদের বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণের নামে একটি ঘরে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা জমা করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সেখানে তাদের শুনানো হয় ‘যা জমা দেবেন এক সপ্তাহের মধ্যে তার দ্বিগুণ ফেরত পাবেন’। এমন প্রতারণার ফাঁদে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৬ শতাধিক মহিলা কোটি কোটি টাকা ওই অফিসে জমা দেন। টাকা জমা দেয়ার এক সপ্তাহ পর দ্বিগুণ টাকা ফেরত চাইলে তারা কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে গত রবিবার সন্ধ্যায় আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকতেখারুল ইসলাম পুলিশকে সাথে নিয়ে ওই অফিসে হানা দেন। এ সময় অফিসে কর্মরত ম্যানেজার নূরুন্নবী ইসলাম (৪৮), বকতিয়ার হোসেন ডায়মন্ড (৩৩) ও রবিউল ইসলাম ছানাকে (৩৫) আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী নারীরা জানান, প্রায় ৬ শতাধিক তরুণীর প্রত্যেকে ৫০ হাজার থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত এ অফিসে জমা দিয়েছেন। কিন্তু দ্বিগুণ টাকা তো দূরের কথা আসল টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা।
আত্রাই থানার ওসি (তদন্ত) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, ইন্স্যুরেন্সের আড়ালে তারা ভয়াবহ প্রতারণা বাণিজ্য শুরু করেছে। রবিবার সন্ধ্যায় ওই অফিস থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটকদের বিররুদ্ধে মামাওলা দায়ের করা হয়। সোমবার ওই তিনজনকে নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। পুলিশের কাছে সোপর্দের পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে হোতাদের পাওয়া যায়নি।