নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০৬:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪৬ পিএম
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের পর ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। অন্যদিকে গাজীপুরে তার মাদ্রাসাটিতে তালা ঝুলছে।
মাদানীকে গত বুধবার নেত্রকোনায় তার বাড়ি থেকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) গাজীপুরের গাছা থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার ইলতুৎমিশ সাংবাদিকদের বলেন, ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে রফিকুলকে।
সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যদের প্রহরায় গাজীপুর জেলা কারাগার নেয়া হয়।
গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মো. বজলুর রশিদ আকন্দ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রফিকুলকে কারাগারে বুঝে পেয়েছেন তারা।
ইলতুৎমিশ জানান, গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন রফিকুল। ওই ঘটনায় বুধবার দিনগত রাত সোয়া ২টার দিকে গাছা থানা মামলা হয়েছে। র্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা থেকে ১০টায় গাজীপুরের গাছা থানাধীন বোর্ড বাজারের কলমেশ্বরর এলাকার শীতক ফ্যাক্টরির ভেতর ওয়াজ মাহফিলে বক্তা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করে, যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।
তার ‘উসকানিমূলক বক্তব্যের ফলে’ ২৬মার্চ ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সংগঠিত হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এখন কারাগারে পাঠানো হলেও পরে হেফাজতে নিয়ে রফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে অবেদন করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
রফিকুলের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামে। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয় বলে স্বজনরা জানায়।
ইসলামী দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় রফিকুলের বয়স ২৫ বছর হলেও আকার-আকৃতির জন্য তাকে ‘শিশু বক্তা’ বলে ডাকেন তার ভক্তরা।
গাজীপুর মহানগরের বাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মারকাজুন নূর আল ইসলামিয়া নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা রয়েছে। হাফেজ রফিকুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও পরিচালক।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, গত ২৫ মার্চ বাড়িয়ালী-নলজানী ঈদগাহ মাঠে ওই মাদ্রাসার হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি প্রদান উপলক্ষে শানে রিসালাত মহাসম্মেলন নামে একটি মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রফিকুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন। ওই অনুষ্ঠানের পরদিন থেকে মাদ্রাসাটি বন্ধ রয়েছে।
গত এক বছর ধরে আমিনুল হোসেন নামের কালীগঞ্জের এক প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে রফিকুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পরিচালনা করছেন। সেখানে আবাসিক, অনাবাসিক ও ডে-কেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নুরানী মক্তব, নাযেরা, হিফজ বিভাগ ছাড়াও প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা।