রোহিঙ্গাদের ফেরাতে মিয়ানমারকে চাপ দিন, ডি-৮ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০৮:০৬ পিএম

ছবি: পিআইডি

ছবি: পিআইডি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘মানবিক বিবেচনাবোধ থেকে বাংলাদেশ ১ দশমিক ১ মিলিয়ন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে। শুরু থেকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদ, সম্মানজনক এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য চেষ্টা করে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিন বছরের বেশি সময় পার হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন এখনো শুরু হয়নি।’

সবাইকে সর্তক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটের সমাধান না হলে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।’ 

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকালে গণভবন থেকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে (ভার্চুয়াল) এ আহ্বান জানান তিনি।

দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে যুব শক্তিকে কাজে লাগানো, তথ্য প্রযুক্তি সম্ভবনার পূর্ণ ব্যবহার, প্রয়োজনীয় আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও অবকাঠামোগত কাঠামো তৈরি, কানেক্টিভিটি বাড়ানো, ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির  ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্কের নেতারা। অনুষ্ঠানে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ডি-৮ এর চেয়ারম্যানশিপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ আগামী দুই বছর ডি-৮ এর চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যবসায়িক ধারণা, মডেল, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে তরুণদের শক্তি এবং সম্ভবনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি, এমনকি সরকারি থেকে বেসরকারি পর্যায়েও ব্যবসা উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের দেশগুলোর (ডি-৮) যুবকদের একত্রিত হতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। ডি-৮ বিজনেস ফোরামের সঙ্গে প্রথম ডি-৮ ইয়ুথ সম্মেলনটি একটি বিরল সুযোগ তৈরি করেছে।’

তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের তথ্য প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে কার্যকরী পার্টনারশিপ এবং বৃহত্তর সহযোগিতা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে যুবদের খুব ভালো সম্পৃক্ততা কভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও আমাদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে।’

গত এক দশকে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে এবং দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করেছে উল্লেখ করেন তিনি। ডি-৮ সদস্য দেশগুলোকে বাণিজ্য বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডি-৮ সেক্রেটারিয়েট সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে সম্ভবনার তথ্য সরবরাহ করতে পারে। এই ধরনের তথ্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আরো বেশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ করতে সহায়তা করবে।’

ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান। কার্যকরী এবং টেকসই উন্নয়নে ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ু ইস্যুতে সহযোগিতা করার করার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সমস্যা বাংলাদেশের পরিবেশ, সমাজ এবং অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।’

দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে অন্যান্য  ডি-৮ রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরাও ভার্চুয়াল মাধ্যমে শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।

এ বছর শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে অংশীদারিত্ব: যুবশক্তি ও প্রযুক্তির প্রস্তুতি’। সম্মেলনে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ  তাইয়েপ এরদোয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ ডি-৮ সদস্য  দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান করেছিলেন। বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনটি সফলভাবে আয়োজন করেছিল। এবার দশম ডি-৮ সম্মেলন আয়োজন করেছে ঢাকা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh