মো. মামুন চৌধুরী
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ০৯:১৩ এএম
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে অনেক কাঁঠালের বাগান। শুধু কি তাই, বাড়ির আঙিনা আর রাস্তার পাশেও কাঁঠাল গাছের ছড়াছড়ি।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর গাছে গাছে কাঁঠালের ব্যাপক মুচি এসেছে। আড়তদার ও কৃষকরা এ বছর কাঁঠালের ভালো ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এসব কাঁঠাল পাকা ও আধাপাকা অবস্থায় হবিগঞ্জের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বাহুবল উপজেলার ‘মুছাই’ ও চুনারুঘাট উপজেলার ‘চণ্ডীছড়া’ বাজারে নিয়ে আসবেন বিক্রেতারা। পাইকাররা এ কাঁঠাল মুছাই থেকে ট্রাক ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাবেন। আর গত কয়েক বছর ধরে কিছু পরিমাণে কাঁঠাল যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়ে আসছে বলে আলাপকালে স্থানীয় আড়তদার, কৃষক ও কৃষিবিভাগ জানিয়েছে। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে রফতানি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
চুনারুঘাটের জাম্বুরাছড়ার সাহেদ মিয়া, নবীগঞ্জের দিনারপুরে ফজলু মিয়া, বাহুবলের রশিদপুর পাহাড়ি এলাকার আমির উল্লা, নূরুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, আছমত মিয়া জানালেন, তাদের বাগানে সহযোগী ফসল হিসেবে গাছে গাছে কাঁঠালের মুচি এসেছে। কাঁঠাল উৎপাদনে আলাদা কোনো যত্ন নিতে হয়নি বলে উৎপাদন খরচও কম। হবিগঞ্জ শহরের ক্রেতা কবির মিয়া বললেন, নির্ভেজাল বিষমুক্ত কাঁঠাল কেনার জন্য প্রতি বছরেই মুছাই গিয়ে থাকেন। এবারও যাবেন।
জেলার বাহুবল উপজেলার পূর্ব ভাদেশ্বর পুকুরপাড় গ্রামের মৃত মুসলিম উদ্দিনের ছেলে সাইদুল ইসলাম জানান, ফয়জাবাদ পাহাড়ি টিলায় তাদের কাঁঠাল বাগান রয়েছে। আর এর ফলনে কোনো খরচ নেই বললেই চলে। পাইকাররা গাছের মুচি কাঁঠাল কিনে রাখছেন। পরে পাকা অবস্থায় বিক্রিতে বেশি মুনাফা পাবেন। আর অনেকে এ অবস্থায় বিক্রি করছেন অগ্রিম টাকা পেয়ে অন্য কাজ করার জন্য।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান বলেন, সরকারিভাবে অত্যন্ত পুষ্টিকর কাঁঠাল ফলের ফলন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাঁঠাল গাছের পাতা থেকে শুরু করে কাঁঠালের প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায় বলে অন্যান্য ফলের তুলনায় এটি লাভজনক। একটি গাছ বহু বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। তবে বন্যামুক্ত এলাকায় কাঁঠালের বাগান করা উচিত। কারণ দীর্ঘদিন এই গাছ পানি সহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকার মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে গাছে গাছে কাঁঠালের মুচি এসেছে। জ্যৈষ্ঠ মাসে কাঁঠাল পাকা শুরু হবে।