কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪২ এএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২১, ০১:১৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
কক্সবাজারের দরিয়ানগর সমুদ্রসৈকতে জোয়ারের পানিতে ভেসে এসেছে আরো একটি মৃত তিমি।
আজ শনিবার (১০ এপ্রিল) ভোরে এটিকে বালিতে আটকে থাকতে দেখা যায়। এটির ওজন দুই থেকে আড়াই টন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ খবর নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, গতকাল শুক্রবার সকালে সৈকতের হিমছড়ি এলাকায় আড়াই টন ওজনের যে তিমি মাছটি ভেসে এসেছিল, ঠিক তার দক্ষিণে নতুন তিমিটি ভেসে এসেছে। এটার ওজনও আগেরটির মতো হতে পারে। দুপুরের দিকে জোয়ারের পানি সরে গেলে পুরো তিমিটি দৃশ্যমান হবে। তখন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় জেলে কামাল উদ্দিন (৫০) বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরতে নামেন। এ সময় দেখতে পান বিশাল একটি তিমি ভেসে আসছে। তিমিটি দরিয়ানগর সৈকতে ভিড়েছে। আগেরটি ভিড়েছে উত্তর দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে হিমছড়ি সৈকতে।
তিমি দুটি একই প্রজাতির বলে ধারণা করা হচ্ছে। গভীর সমুদ্রে ফিশিং ট্রলারের ধাক্কায় তিমির মৃত্যু হতে পারে অথবা বিষাক্ত বর্জ্য খেয়ে ফেলার কারণেও তিমির মৃত্যু হতে পারে। এই তিমির শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা না গেলেও শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জোয়ারের সাথে ভেসে আসে বড় একটি মৃত তিমি। এটি একইদিন রাত ১টায় মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। গবেষণার জন্য হাড় ও অন্য প্রত্যঙ্গ সংগ্রহের জন্য পুঁতে ফেলা স্থানটি সংরক্ষণ করছে সমুদ্র ও মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পিএইচডি ফেলো মোহাম্মদ আশরাফুল হক জানান, শুক্রবার তীরে উঠে আসা মরা প্রাণীটি ব্রাইড হোয়েল প্রজাতির ও এটি প্রাপ্ত বয়স্ক। নীল তিমি গ্রুপের একটি প্রজাতি হল ব্রাইড হোয়েল। এটি আমাদের বঙ্গোপসাগরেরই বাসিন্দা। তিমি সাধারণত দলবেধে চলে। কোনো কারণে দলছুট হলে অনেক সময় তিমি মারা যায়। এটি ও আজ তীরে আসা তিমিটির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এসব তিমি অন্তত ১০-১২দিন আগে মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু তিমিগুলোর মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রণয় চাকমা বলেন, মাটিতে পুতে ফেলা তিমির দেহাবশেষের প্রয়োজনীয় অংশ সমুদ্র ও মৎস্য বিজ্ঞানীদের পরামর্শে শিক্ষা ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের লক্ষ্যে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাংস পঁচে গেলে হাড়গুলো তুলে যেন সংরক্ষণ করা যায় সেই লক্ষ্যে পুঁতে ফেলা অংশটি ঘিরে রাখা হয়েছে। আজকে (শনিবার) ভেসে আসা তিমির দেহাবশেষও একই পদ্ধতিতে পুঁতে ফেলার উদ্যোগ চলছে।