ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২১, ০৫:৩৭ পিএম
পশ্চিমবঙ্গে শনিবার (১০ এপ্রিল) নির্বাচনী সহিংসতায় ৫ জনের মৃত্যুর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ ও বাদুড়িয়ার জনসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগও দাবি করেন।
তার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢাল করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে ভোটারদের গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। নিজেদের ভোটবাক্স ভর্তি করতে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বরাবর বলে আসছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী আমার শত্রু নয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় যে চক্রান্ত চলছে, তা আজ প্রমাণ হয়ে গেল। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের গুলি করে মেরে দেয়া হয়েছে।’
আত্মরক্ষার জন্যই শীতলকুচিতে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স (সিআইএসএফ) গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিজেপি নেতৃত্ব যদিও মমতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। কোচবিহারের সভায় তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরার পরামর্শ না দিলে, মানুষ উত্তেজিত হতেন না আর গুলিও চলত না বলে দাবি করেছেন তারা।
কিন্তু মমতার বক্তব্য, ‘বিজেপি জানে হেরে গিয়েছে। তাই ভোটারদের গুলি করে মারছে। তবু মানুষকে বলব, আপনারা শান্ত থাকুন। নির্বিঘ্নে ভোট দিন। কোনো অশান্তির মধ্যে যাবেন না। যারা অশান্তি করে, তারা রাক্ষসের দল। যারা শান্তি রক্ষা করে, তারা মানুষ। মানুষকে মানবিকতা দিয়েই জয় করতে হবে।
মমতার দাবি, আজ শীতলকুচিতে ৪ জনকে গুলি করে মেরেছে। সকালেও একজন মারা গেছে। এত ঔদ্ধত্য আসে কীভাবে? কী অন্যায় করেছিল মানুষগুলো? তুমি চাও বিজেপি জিতুক। কিন্তু মানুষ কাকে ভোট দেবেন, তুমি ঠিক করার কে? অমিত শাহ কেন তার এজেন্সিকে মেয়েদের ভয় দেখাতে বলে পাঠাবেন? গ্রামে, সীমান্ত অঞ্চলে গুলি করে মেরে দেয়া হচ্ছে মানুষকে। ভোটবাক্সেই এর বদলা নিতে হবে। নইলে নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে না।
শীতলকুচির ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘাত চলছিল। স্থানীয় একাংশের দাবি, তার মধ্যেই দলে দলে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন তারা। সেই সময় বিনা প্ররোচনাতেই তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বুথে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী। হাতে বা পায়ে গুলি না করে, সরাসরি বুকে গুলি করা হল কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের দাবি, ঝামেলা থামাতে গেলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরে ১০০ থেকে ২০০ জন মানুষ। রাইফেল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা হয়। তাতেই আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় সিআইএসএফ। কিন্তু এর আগে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে পক্ষপাতিত্ব করা বিবেকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ করে মমতা বলেন, গুলি করে মেরে ফেলে আত্মরক্ষা বলছে এখন। লজ্জা হওয়া উচিত। চার দফা নির্বাচনে যে ১৮-২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার ১২ জন তৃণমূলের।