‘শিশুবক্তা’ রফিকুলের মামলায় পর্নোগ্রাফির ধারা যুক্ত

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৬:০৫ পিএম

রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ গ্রেফতার ‘শিশুবক্তা’ হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি ধারা যুক্ত করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ। 

ইলতুৎমিশ বলেন, কথিত শিশুবক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী মোবাইল ফোনে নিয়মিত পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তার বিরুদ্ধে মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা যুক্ত করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জেলহাজতে থাকা রফিকুলের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সিনিয়ার জুডিশিয়াল আদালতে আবেদন করা হয়েছে। 

রফিকুলের বিরুদ্ধে মামলায় যুক্ত ধারায় বলা হয়েছে পর্নোগ্রাফি বিক্রি, ভাড়া, বিতরণ, সরবরাহ, প্রকাশ্যে প্রদর্শন বা যেকোনো প্রকারে প্রচার করলে বা যেকোনো উদ্দেশ্যে প্রস্তুত, উৎপাদন, পরিবহন বা সংরক্ষণ করলে; অথবা কোনো পর্নোগ্রাফি প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে কোনো প্রকারের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে; বা এই উপ-ধারার অধীন অপরাধ বলে চিহ্নিত কোনো কার্য সংঘটনের উদ্যোগ নিলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবেন। এই অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

গত বুধবার (৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রবিরোধী, উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগে রফিকুল ইসলামকে নেত্রকোণা থেকে আটক করে র‍্যাব। পরদিন বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) তাকে গাজীপুরের গাছা থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার ইলতুৎমিশ সাংবাদিকদের বলেন, গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন রফিকুল। ওই ঘটনায় বুধবার দিনগত রাত সোয়া ২টার দিকে গাছা থানা মামলা হয়েছে। র‌্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামি গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা থেকে ১০টায় গাজীপুরের গাছা থানাধীন বোর্ড বাজারের কলমেশ্বরর এলাকার শীতক ফ্যাক্টরির ভেতর ওয়াজ মাহফিলে বক্তা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করে, যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।

তার ‘উসকানিমূলক বক্তব্যের ফলে’ ২৬মার্চ ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সংগঠিত হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এখন কারাগারে পাঠানো হলেও পরে হেফাজতে নিয়ে রফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে অবেদন করা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

রফিকুলের বাড়ি নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামে। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয় বলে স্বজনরা জানায়।

ইসলামী দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় রফিকুলের বয়স ২৫ বছর হলেও আকার-আকৃতির জন্য তাকে ‘শিশুবক্তা’ বলে ডাকেন তার ভক্তরা।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh