স্বাগতম মাহে রমজান

মাহমুদ সালেহীন খান

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১১:৩২ এএম

বছর ঘুরে আবারো এলো অফুরন্ত রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের মাস মাহে রমজান। সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান। 

এ মাস মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তায়ালার রহমত, ক্ষমা ও পাপমুক্তির এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে। রমজানেই বিশ্ব মানবের জন্য এই মাসেই আল্লাহ তায়ালা নাজিল করেছেন শেষ ও চিরন্তন হেদায়াত-গ্রন্থ আল-কোরআন। এই কারণেও এই মাসের মর্যাদা ও তাৎপর্য অপরিসীম।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মাহে রমজান, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য  হেদায়েত ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা এবং (যা আসমানী) হেদায়েত ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয়কারী।’ (সুরা বাকারা : ১৮৫)

রমজান মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ। এ মাসের একটি রোজা সারা বছর রোজা রাখার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও সওয়াবের কাজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা : ১৮৩)। 

রোজা রিপু দমনের কার্যকরী অনুশীলন। রোজার মাধ্যমে মানুষ নিজ কুপ্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন রমজান মাসের আগমন হয় তখন দুষ্ট শয়তানগুলোকে শেকল দ্বারা বেঁধে রাখা হয়। আর এরূপ ঘোষণা চলতে থাকে- হে উত্তম কর্মের প্রত্যাশী! তুমি অগ্রসর হও। হে মন্দকর্মের প্রত্যাশী! তুমি পেছনে হটো।’ (বুখারি : ১৯০৪; মুসলিম : ১১৫১)। 

এ কারণে রমজান মাসে মানুষের মধ্যে নেক আমলের আগ্রহ অনেক বেড়ে যায় ও মসজিদগুলো মুসল্লিতে একদম পূর্ণ হয়ে যায়। 

রমজানের তাৎপর্য সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হযরত আবু হুরাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের নিকট রমজান মাস উপস্থিত। এটি অত্যন্ত বরকতময় মাস। আল্লাহ তায়ালা এ মাসে তোমাদের রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর অবাধ্য শয়তানকে আটক রাখা হয়। আল্লাহর জন্য এ মাসে একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি এ রাতের কল্যাণ হতে বঞ্চিত হয়, সে সত্যিই বঞ্চিত ব্যক্তি।’ (ইবনে মাজা : ১৬৪২)। 

অন্য হাদিসে রোজাকে ঢাল আখ্যায়িত করা হয়েছে। রণক্ষেত্রে ঢাল যেমন যোদ্ধাকে শত্রুর আঘাত থেকে রক্ষা করে, তদ্রুপ মুসলমানদেরকে তাদের চরম শত্রু শয়তানের আঘাত থেকে রোজা বাঁচিয়ে রাখে।

এ মাসে সংযম ও সিয়াম সাধনার পুরস্কার হিসেবে হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বনি আদমের প্রতিটি আমল তার নিজের জন্য, সিয়াম ছাড়া। কেননা তা শুধু আমার জন্য। সুতরাং আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো।’ (বুখারি : ১৯০৪; মুসলিম: ১১৫১)। 

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘রোজাদারের জন্য দুটি বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে। একটি ইফতারের সময় আর অন্যটি হলো যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। আর তিনি তাকে বিশাল পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করবেন ‘। (মুসলিম : ১১৫)

হযরত আবু হুরাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত- প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমান ও আত্মপর্যালোচনার সাথে রমজানের সাওম পালন করবে, আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি : ৩৭)

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh