মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪৬ এএম

রোজা আসতেই আবারো বেড়েছে মুরগি ও ডিমের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম হালিপ্রতি বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর লেয়ার এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘লকডাউনের’ কারণে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে, তাই দাম বেড়ে গেছে। ‘লকডাউন’ শেষে দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

কারওরান বাজার এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ২৮ টাকা হালিতে বিক্রি হওয়া ফার্মের মুরগির ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকা হালিতে। অর্থাৎ হালিতে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকার বেশি। আর ৮৪ টাকায় বিক্রি হওয়া এক ডজন ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়।

বাড্ডার বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৬৫ টাকা কেজিতে কেনাবেচা হচ্ছে। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ১৫০-১৫৫ টাকা কেজিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। তবে বেশি দাম বেড়েছে লেয়ার মুরগির। রোজার আগেও ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২১০ টাকা কেজি দরে। আর পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকা কেজিতে।

সোনালী কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩৫০টাকা কেজি দরে। অথচ রোজার আগেও এ মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩২০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগি, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৫০-৪৮০ টাকা কেজিতে।

মুরগির পাশাপাশি বাজারগুলোতে গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে। আবারও কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা কেজি দরে।

বেড়েছে মাছের দামও। ২০০ টাকার কেজির রুই মাছের দাম ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। আর ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৯০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া শিং মাছ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ বাজারে বেগুনের কেজি ৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে।

খিলগাঁও তালতলা বাজারে ১২০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করা আফজাল হোসেন বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে বেগুনের দাম বেড়েছে। প্রথম রোজায় বেগুনের কেজি ৮০ টাকা বিক্রি করি। পাইকারিতে দাম বাড়ায় আজ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, রোজায় বরাবরই বেগুনের চাহিদা বেশি থাকে। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই বেগুনের এমন দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও বাজারে বেগুনের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।

রামপুরা বাজারে ১০০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করা মো. মিলন বলেন, যেভাবে বেগুনের দাম বাড়ছে তাতে কেজি দেড়শ টাকা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। দাম বাড়লেও এক শ্রেণির ক্রেতারা ঠিকই বেগুন কিনছেন।

তিনি বলেন, কেউ কেউ বেগুনের দাম শুনেই চলে যাচ্ছে। সবকিছু ভেবে-চিন্তেই বেগুন এনেছি। বেশি আনলে বিক্রি হবে না, তাই পাঁচ কেজি এনেছি।

এদিকে গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পটল, বরবটি, শিম, ঢ়েঁড়স, টমেটোসহ অন্যান্য সবজিগুলোও।

পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। ঢ়েঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

৪০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিমের কেজি আবার ৬০ টাকায় উঠেছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ধুন্দুলের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

রোজায় চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে পাকা টমেটো ও শসার। গত সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে শাকের। বাজার থেকে এখন শাক এক আটি কিনতে ১৫ টাকা বা তার বেশি গুনতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল শাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমি শাক। পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

সবজির দাম নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে মালিবাগের বাসিন্দা মো.. সুমন বলেন, রোজাকে হাতিয়ার করে ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়ি দিয়েছে। এই মহামারির মধ্যেও ব্যবসায়ীরা এই অনৈতিক কাজ করছে। আল্লাহ এটা সহ্য করবে না।

খিলগাঁও থেকে বাজার করা সাদা আলী বলেন, বাজারে কারো কোনো তদারকি নেই। এ কারণে মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়ি দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের উচিত দ্রুত বাজার তদারকিতে নামা। তা না হলে কষ্টে থাকা মানুষগুলোর কষ্ট আরো কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh