ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২১, ০৩:০২ পিএম
ছবি: কলকাতা২৪/৭
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোটেও নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেলো। প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
কেননা বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকার পরও বিভিন্ন বুথে কী করে অবৈধ জমায়েত, ইটবৃষ্টি, মারধর হচ্ছে সেটাই ভাবাচ্ছে রাজ্যের মানুষকে।
গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। শীতলকুচির পর এবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে।
আর এই কারণেই প্রশ্ন উঠছে নির্বাচন কমিশনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পূর্ব ঘোষণা নিয়ে।
আজ শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রাজ্যের ৬ জেলার ৪৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। মোতায়েন করা হয়েছে মোট ৮৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটের কাজে ছয় জেলায় দায়িত্বে মোট ১৫ হাজার ৭৯০ পুলিশকর্মী।
উত্তর ২৪ পরগনার ১৬ আসন, পূর্ব বর্ধমানের ৮ আসন, নদিয়ার ৮ আসন, জলপাইগুড়ির ৭ আসন, দার্জিলিংয়ে ৫ আসন ও কালিম্পঙের একটি আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ।
নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে সল্টলেকের শান্তিনগর এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ হয় পঞ্চম দফার নির্বাচন চলাকালীন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে এক মহিলাকে টেনে রাস্তায় ফেলে মার দেয়া হয়। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। বিধাননগরের বিজেপির প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত ও তৃণমূল প্রার্থী সুজিত বসু এই ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন। বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকরা পাথর ছুড়তে থাকে। ভোটারদের হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটে। কী করে বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে অবৈধ জমায়েত হতে পারলো সেটাই প্রশ্ন।
বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে বহুক্ষণ পরে মাইক ব্যবহার করে উত্তেজিত জনতাকে সতর্ক করে বলেন হয় বাড়ি যান না হলে ভোট দিতে চলে যান। এরপর কথা না শুলনে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ এলাকা স্যানিটাইজ করে।
বর্ধমানের মেমরিতে বিজেপির পোলিং এজেন্টকে বুথে ঢুকতে বাধা দেন প্রিসাইডিং অফিসার। বিজেপির অভিযোগ, এই প্রিসাইডিং অফিসার তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। এদিন শান্তিপুরের হরিপুরে বিজেপির মণ্ডল সভাপতির বাড়ির কার্নিশে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমা রাখার অভিযোগ করা হয়। মিনাখায় সকালে বোমাবাজি হয়েছে। কল্যাণীর গয়েশপুর, সগুনা প্রভৃতি জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ এসেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
প্রশ্ন হচ্ছে পঞ্চম দফার নির্বাচনে ৪৫টি বিধানসভার জন্য ৮৫৩.০৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ১৫ হাজার ৭৮৯টি বুথের জন্য এর পাশাপাশি রয়েছে আরও ৩২ হাজার ৬৭২জন রাজ্য পুলিশ। বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা রয়েছে। তারপরেও বুথ সংলগ্ন এলাকায় সমানে চলছে অবৈধ জমায়েত, মারামারি, হুমকি, ভয় দেখানো, বাড়িতে বোমা রাখার মতো ঘটনা। এটাই যদি হবে তাহলে নির্বাচন কমিশন কী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলো সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে অবৈধ জমায়েত সরিয়ে দেয়ার জন্য গ্রেফতারের অধিকার আছে। তাহলে কেন এই জনতাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? গ্রেফতার করলে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতো। তাতে কিছুটা হলেও এই অবৈধ জনতার বুথের সামনে জমায়েত কমতে পারতো। তবে আশ্চর্যের ঘটনা হচ্ছে কোনো জায়গায় গোলমাল হওয়ার পর সেটা সংবাদ মাধ্যমে দেখানোর পর কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।
তাই প্রশ্ন উঠছে, নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে রাজ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রেখে নির্বাচন করার যে প্রয়াস কমিশন নিয়েছিল সেটা কি বিফলে গেলো? -কলকাতা২৪/৭