বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:৩৪ এএম | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:৩৭ এএম
কঠোর বিধিনিষেধে যানবাহন চলাচল বন্ধ। পাওয়া যাচ্ছিল না অ্যাম্বুলেন্সও। নিরুপায় ছেলে মাকে বাঁচাতে নিজের পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেল চালিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এমন একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিটি বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫৭ বছর বয়সী অসুস্থ রেহানা পারভীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌর শহরের বাসিন্দা। তার ছেলে জিয়াউল হাসান কৃষি ব্যাংকের ঝালকাঠি শাখার কর্মকর্তা।
রেহানা পারভীনের ভাগ্নে নাঈম হোসেন জানান, নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকা রেহানা পারভীন। কয়েকদিন আগে তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নমুনা দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার তার করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে।
শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বাড়িতেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। অক্সিজেন লেভেল কমে আসায় তাকে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়া হয়। কিন্তু শনিবার বিকেলে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ছেলে জিয়াউল হাসানের বরাত দিয়ে নাঈম জানান, লকডাউনের কারণে এমনিতেই সড়কে যানচলাচল খুবই সীমিত। আর রেহানা পারভীন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাকে কেউ হাসপাতালে নিতে চাচ্ছিলেন না। কোথাও ফোন করে অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। তাই তাকে মোটরসাইকেলে নিয়েই রওনা হন জিয়াউল হাসান।
বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হিরন পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল বলেন, আমরা ওই এলাকায় রুটিন দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন বাকেরগঞ্জের দিক থেকে মোটরসাইকেলটি আসছিল। মোটরসাইকেলটি দেখে প্রথমে আমরা থামানোর সিগন্যাল দিয়েছিলাম। যখন দেখলাম মোটরসাইকেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিজেন মাস্ক পরে রোগী যাচ্ছেন, তখন আর বাধা দেইনি। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে চেক পোস্ট পার করে দিয়েছি।
ওই নারীর ছেলে জিয়াউল হাসান বলেন, রাস্তায় মা যেন অক্সিজেনের অভাবে বেশি অসুস্থ হয়ে না পড়ে, তাই পিঠের সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে নিয়েছিলাম। মাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।