করোনার টিকাকে বিশ্বজনীন পণ্য ঘোষণা করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২১, ০২:০০ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

কভিড-১৯ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যায়সঙ্গতভাবে ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রত্যেকের ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্তৃত্বে বিশ্বাস করে।

আজ মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) সকালে ‘বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার’ (বিএএফ) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ধারণকৃত ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃত্বে বিশ্বাসী। প্রত্যেকেরই যাতে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা পূরণ হয় সে লক্ষ্যে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে কার্যকর করতে সব দেশের একত্রে কাজ করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ডব্লিউএইচও, জিএভিআই ও সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাগুলো অবশ্যই সদস্য রাষ্ট্রের অধিকারকে সমর্থন করবে এবং ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, কভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক গণপণ্য হিসাবে ঘোষণা করা উচিত। ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী দেশগুলোকে সার্বজনীন ভ্যাকসিনের কভারেজ অর্জনের লক্ষ্যে অন্যদেরকেও ভ্যাকসিন তৈরি করতে সহায়তা করা উচিত।

চারদিনের বার্ষিক বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলন, যার প্রতিপাদ্য ‘এ ওয়াল্ড ইন চেঞ্জ: জয়েন হ্যান্ডস টু ট্রেংদেন গ্লোবাল গভর্নেন্স অ্যান্ড অ্যাডভান্স বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) কোঅপারেশন।’

শেখ হাসিনা বলেন, এই সংকটময় সময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তাও আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর তহবিলগুলোতে আরো বেশি প্রবেশাধিকার প্রয়োজন।

কভিড-১৯ মহামারি আমাদের মানবসভ্যতার সন্ধিক্ষণে বিশেষত ইতিহাসের চূড়ান্ত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মহামারির আর্থসামাজিক প্রভাব ব্যাপক, যা ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে।

তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, সুতরাং, এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অংশীদারিত্বকে আরো জোরদার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহামারির বিরূপ প্রভাব হ্রাস করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরো বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা এখন পর্যন্ত ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি যা আমাদের জিডিপির ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। কেউ যাতে পেছনে না থাকে, এমনকি মহামারি সংকটেও যাতে কেউ পেছনে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক গভর্নেন্সের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের প্রাধান্যে বিশ্বাস করে।

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে সার্ক, বিমসটেক, এসএএসইসি, বিবিআইএন ও বিসিআইএমের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিভিন্ন আঞ্চলিক যোগাযোগের উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও এর বাইরেও বহু মাল্টি মডেল লিংকেজের সাথে সম্পৃক্ত ও বাংলাদেশ বিশ্বাস করে বৈশ্বিক গভর্নেন্স শক্তিশালী করা ও অ্যাডভান্স বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও এর বাইরেও বহু-মাল্টিমডেল লিংকেজের সাথে সম্পৃক্ত এবং বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে বিআরআই এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই মহাদেশে বিপুল জনসংখ্যা, বিস্তৃত বাজার ও প্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই তাহলে আরো দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি। এটি আমাদের এসডিজি অর্জন করতেও সহায়তা করবে যা আমরা প্রত্যেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

প্রযুক্তি সহযোগিতা বিনিময় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একে অপরের সাথে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আমাদের সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা বাড়ানো দরকার। হাই-টেক পার্ক, ব্রডব্যান্ড ও স্যাটেলাইট সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য কাঠামো তৈরি করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমরা আমাদের তরুণদের উদ্ভাবনের জন্য প্রস্তুত করছি। এক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে সুবিধাগুলো বিনিময়ের মাধ্যমে পাশাপাশি আমরা সাইবার অপরাধসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পারি।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh