বৈশাখে মাসে বাড়ে কারিগরদের কদর

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২১, ০৩:২২ পিএম

ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

ছবি: সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সারা বছর কৃষিপণ্য তৈরির কারিগরদের অলস সময় কাটলেও বৈশাখ মাস এলেই বাঁশ, বেত শিল্প ও কৃষিকাজে ব্যবহৃত অন্য সব পণ্যেরও কদর বেড়ে যায়। এই সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয় কারিগরদের। 

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তাই বাশঁ দিয়ে তৈরি টোকরি, উড়া, কুলা, কাদি, ডুল, জাকি, চালনি ও লোহা দিয়ে তৈরি কাচি, দা’সহ অন্য জিনিসপত্রের প্রতি ক্রেতাদের যেমন চাহিদা বাড়ছে। তেমনি বিক্রেতা ও কারিগরদের ওই সব কৃষিপণ্য তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে। 

সুনামগঞ্জে হাওরাঞ্চলে এক সময় প্রতিটি পরিবারে বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এর সাথে জড়িত মালিক, শ্রমিক, কারিগরদের ব্যস্ততা ও কদরও ছিলো। কিন্তু দিন দিন এর স্থান দখল করেছে প্লাস্টিক পণ্য। একদিকে বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়া ও দাম বেশি, অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক শিল্পের প্রসারের কারণেই বাঁশ, বেত ও কামার শিল্প এখন হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছে। 

তবে বৈশাখ মাসে ক্রেতাদের সমাগমে যেন মেলায় পরিণত হয়ে উঠে বাজারগুলো। অথচ সারা বছর এই বাজারগুলো থাকে সুনসান। বাজারে কৃষিপণ্যের হাটগুলোতে বিশাল আয়োজন থাকলেও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন কৃষিকাজে ব্যবহৃত কৃষিপণ্যের বিক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন এখন। 


তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বাঁশের ঝুঁড়ি। স্থানীয়রা বলে- টোকরি, উড়া, ডুল। এছাড়াও ধান শুকানোর চাঁচ, কাগজের পাল, ধান রাখার ক্ষুত্র গোলা, দা ও ধান কাটার কাচিসহ আরো অনেক কিছু। 

তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে সোহেল মিয়া বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম বাজারে। কিন্তু কিছুই করার নেই। মাঠের ধান ঘরে তুলার জন্য এসব পণ্যের তুলনা নেই। তাই বেশি দামেই নিতে হচ্ছে। 

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ালখলা গ্রামের কৃষক কামাল মিয়া বলেন, বৈশাখ মাসে ধান ঘরে তোলার জন্য বাঁশের জিনিসগুলো খুবই উপকারী। তবে দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি।

তবে আমিনুল, সাকিবুরসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব পণ্য উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে বেশি। এখন বাঁশ, বেত ও লোহার দাম অনেক বেশি। বাঁশ ও বেত উৎপাদনও নেই। আবার পাওয়া যায় একেবারেই কম। পূর্বে একজন শ্রমিককে দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা মজুরি দিতে হতো। এখন ৫০০-৬০০ টাকা দিতে হয়। তাও পাওয়া যায় না। আর সরকার আমাদেরকে কোনো ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছেন না। 

বালিজুড়ী ইউনিয়নের কামার রাশেদ বলেন, যারা ওই সব পণ্য তৈরি করেন তাদের কাছ থেকেই আমাদের চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে একটু বেশি দামে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বাশঁ, বেত শিল্প ও কামার শিল্প আমাদের আদি শিল্প। নানান কারণেই আজ তা অবহেলিত ও বিলীনের পথে। এ শিল্প রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh