নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ আনলো ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২১, ০৬:১৭ পিএম

ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ

ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটনের নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ

ঈদ উপলক্ষে নতুন মডেলের স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে আনলো দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংকস) বেজড নন-ফ্রস্ট এই স্মার্ট ফ্রিজ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে মোবাইল ফোনে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তির এই ফ্রিজ ৫০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এই ফ্রিজের আয়োনাইজার সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণু ধ্বংস করতেও সক্ষম। আছে ডোর অ্যালার্ম, হিউম্যান ডিটেক্টরসহ অত্যাধুনিক নানা ফিচার। এর ডিজাইনেও রয়েছে আভিজাত্যের ছাপ। ৬এ৯ মডেলের এই ফ্রিজের দাম ৮০ হাজার ৯০০ টাকা। 

জানা গেছে, ফ্রিজে প্রতিদিন বা মাসিক কতটুকু বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে? কত বিল আসছে? ভোল্টেজ লো না হাই? কম্প্রেসার কি ওভারলোডে চলছে? এসব তথ্য জানা যাবে ওয়ালটনের স্মার্ট ফ্রিজে। ঈদের বিশেষ উপহার হিসেবে নতুন মডেলের এই স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন ফ্রিজ গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগের প্রকৌশলীরা। তারাই বাংলাদেশে প্রথম বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তির স্মার্ট ফ্রিজ তৈরি করেছে। যা কিনা শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়; দেশিয় প্রকৌশলী তথা বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল মাইলফলক।  

ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের ইনচার্জ মো. সোহেল রানা জানান, স্মার্ট ফ্রিজটি টেম্পারড গ্লাসের সাইড বাই সাইড ডোর ডিজাইনে তৈরি। এতে রয়েছে আভিজাত্যের ছাপ, মেক্সিমাম স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বা বিশাল জায়গা। আছে ডোর অ্যালার্ম, চাইল্ড লক, ইন্টেলিজেন্ট জার্ম প্রোটেকশন বা জীবাণুধ্বংসকারী আয়োনাইজার সিস্টেম, হিউম্যান ডিটেক্টর, ডিজিটাল ডিসপ্লে, থ্রিডি ম্যাট্রিক্স স্পিড অপটিমাইজেশনসহ আরো অনেক অত্যাধুনিক সব ফিচার। 

ওয়ালটন ফ্রিজ আরএন্ডডি (গবেষণা ও উন্নয়ন) রেফ্রিজারেশন-ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ইনচার্জ প্রকৌশলী আব্দুল মালেক সিকদার বলেন, এর কন্ট্রোল বোর্ডে আইওটি ডিভাইস হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে ওয়াই-ফাই মডিউল। ফলে ওয়াইফাই ইন্টারনেট কানেকশনের আওতায় আসবে এই ফ্রিজ। গ্রাহককে মোবাইল ফোনে ‘ওয়ালটন স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্সেস’ নামে একটি বিশেষ অ্যাপস ইনস্টল করে নিতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই বিশেষ অ্যাপস এর ফ্রিজ অপশন সিলেক্ট করে গ্রাহক বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই ফ্রিজের সেটিংস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। 

তিনি আরো জানান, ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজে আছে এআই বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বেজড থ্রিডি ম্যাট্রিক্স স্পিড অপটিমাইজেশন টেকনোলজি। রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার কম্প্রেসার। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে সিএফসি এবং এইচএফসিমুক্ত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর৬০০এ রেফ্রিজারেন্ট। ফ্রিজের ভেতরে আছে এলইডি লাইট। বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে ৫০ শতাংশেরও বেশি। নন-ফ্রস্ট হওয়ায় ভেতরের বডিতে কোনো বরফ জমবে না। এছাড়া, আয়োনাইজার প্রযুক্তি থাকায় সংরক্ষিত খাবারের গায়ে কোনো ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের জীবাণু থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে। ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজের দরজা ১ মিনিটের বেশি খোলা থাকলে এর ডোর অ্যালার্ম সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেজে উঠবে। 

ওয়ালটন আরএন্ডটি বিভাগের প্রধান তাপস কুমার মজুমদার বলেন, প্রযুক্তি নিয়ে নিয়মিত গবেষণার ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন ফ্রিজে সংযোজন করা হলো আইওটি বেজড স্মার্ট প্রযুক্তি। বিএসটিআই নির্ধারিত মানদন্ড ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস ১৮৫০:২০১২’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ। 

ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান মল্লিক জানান, শুধু ওয়ালটন ফ্রিজেই নয়; দেশের বাজারেও স্মার্ট ফ্রিজ এক নতুন সংযোজন। ক্রেতাদের এ ধরণের আরো নতুন নতুন প্রযুক্তি ও ফিচার সমৃদ্ধ পণ্য উপহার দেয়ার এই ধারা অব্যাহত থাকবে। সেই লক্ষ্যে বিশ্বের লেটেস্ট সব প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালাচ্ছে ওয়ালটন আরএন্ডডি টিমের প্রকৌশলীরা। তার প্রত্যাশা- নতুন ও অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাবে। 

জানা গেছে, ওয়ালটনের প্রতিটি ফ্রিজ বাংলাদেশ এ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড স্বীকৃত এবং আইএসও সনদপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব নাসদাত-ইউটিএস (NUSDAT-Universal Testing Lab) থেকে মান নিয়ন্ত্রণ সনদ পাওয়ার পর বাজারজাত করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ গুণগতমানের এই আত্মবিশ্বাসেই ওয়ালটন ফ্রিজে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া খুচরা যন্ত্রাংশে ৪ বছরের ওয়ারেন্টিসহ ৫ বছর পর্যন্ত ফ্রি বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। আইএসও সনদপ্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে বিস্তৃত ৭৬টি সার্ভিস সেন্টারের থেকে গ্রাহকদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করা হচ্ছে। 

কর্তৃপক্ষ  জানায়, ফ্রিজ উৎপাদন ও রফতানিতে ইতোমধ্যে ওয়ালটন অর্জন করেছে আইএসও, ওএইচএসএএস, ইএমসি, সিবি, আরওএইচএস, এসএএসও, ইএসএমএ, ইসিএইচএ, জি-মার্ক, ই-মার্ক ইত্যাদি সার্টিফিকেট। ফলে স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন ফ্রিজের মার্কেট শেয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ। দেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডের মর্যাদাস্বরূপ ওয়ালটন ফ্রিজ সাতবার ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। এছাড়া ওয়ালটন ‘সুপার ব্র্যান্ড ২০২০’ খেতাব পাওয়ার পাশাপাশি ২০২১ সালের জন্য ‘সুপারব্র্যান্ড’ এর সম্মাননা পেয়েছে। দেশের গন্ডী পেরিয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেলযুক্ত ওয়ালটনের তৈরি ফ্রিজ এখন রফতানি হচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশে। শিগগিরই অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা এবং ইউরোপের বাজারে ফ্রিজ রফতানি শুরু করবে বাংলাদেশি এই ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট। 

উল্লেখ্য, ওয়ালটন বর্তমানে ১০,৯৯০ টাকা থেকে ৮০,৯০০ টাকার মধ্যে দেড় শতাধিক মডেলের ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, ডিপ ফ্রিজ ও বেভারেজ কুলার উৎপাদন এবং বাজারজাত করছে। এসব ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড গ্লাস ডোরের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, বিএসটিআইর সর্বোচ্চ এনার্জি এফিশিয়েন্সি ‘ফাইভ স্টার’ রেটিং প্রাপ্ত রেফ্রিজারেটর। এসব ফ্রিজে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিইসিএস টেকনোলজি সমৃদ্ধ থ্যালেটমুক্ত গ্যাসকেট, শতভাগ কপার কনডেনসার, ওয়াইড ভোল্টেজ ডিজাইন। ফলে এসব ফ্রিজে ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। দেশজুড়ে প্রায় ৪০০ টি ওয়ালটন প্লাজাসহ ১৭ হাজারেরও বেশি আউটলেটের মাধ্যমে ওয়ালটন ফ্রিজ পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রতিটি ঘরে। 

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

Design & Developed By Root Soft Bangladesh