জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৮ এএম
সুনামগঞ্জে বাঁশ দিয়ে তৈরি টোকরি, উড়া, কুলা, কাদি, ডুল, অন্য জিনিসপত্র
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে বাঁশ দিয়ে তৈরি টোকরি, উড়া, কুলা, কাদি, ডুল, জাকি, চালনি, লোহা দিয়ে কাঁচি, দা অন্য জিনিসপত্র ক্রেতাদের যেমন চাহিদা বাড়ছে, তেমনি বিক্রেতা ও কারিগররা ওইসব কৃষিপণ্য তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে। এই সময়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কারিগররা।
জেলার ১১টি উপজেলার বাজার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুনামগঞ্জে হাওরাঞ্চলে এক সময় প্রতিটি পরিবারে বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা ছিল। ছিল এর সঙ্গে জড়িত মালিক, শ্রমিক, কারিগরদের ব্যস্ততা ও কদর; কিন্তু দিন দিন এর স্থান দখলে নিচ্ছে সহজলভ্য প্লাস্টিক পণ্য।
একদিকে বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়া ও দামবেশি অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক শিল্পের প্রসারের কারণেই বাঁশ, বেত, কামার শিল্প এখন হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছে। তবে বৈশাখ মাসে ক্রেতাদের সমাগমে যেন মেলায় পরিণত হয়ে উঠে বাজারগুলো। অথচ সারাবছর এই বাজারগুলো থাকে সুনসান নীরব। বাজারে কৃষি পণ্যের হাটগুলোতে বিশাল আয়োজন থাকলেও বাঁশের তৈরি বিভিন্ন কৃষিকাজ ব্যবহৃত টোকরি, উড়া, কুলা, কাদি, ডুল, জাকি, চালনি বিক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন এখন।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে সোহেল মিয়া বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম বাজারে; কিন্তু কিছুই করার নেই। মাঠের ধান ঘরে তুলার জন্য এসব পণ্যের তুলনাই নেই। তাই বেশি দামেই নিতে হচ্ছে। সব কিছুতেই এখন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করেন। বৈশাখ মাসকে ঘিরে কৃষি পণ্যের ব্যবসায়ীরাও তাই করেছেন। সব ধরনের পণ্যের গলাকাটা দাম নিচ্ছেন তারা।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ালখলা গ্রামের কৃষক কামাল মিয়া বলেন, বৈশাখ মাসে ধান ঘরে তোলার জন্য বাঁশের জিনিসগুলো খুবই উপকারী। তাছাড়া প্লাস্টিক তৈরি এই সব পণ্য পাওয়া যাবে না। তাই এসব কিনতে এসেছি বাজারে। তবে দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বাঁশ ও বেত শিল্প এবং কামার শিল্প আমাদের আদি শিল্প। নানান কারণেই আজ তারা অবহেলিত। তাদের রক্ষায় সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।